দেশে গত সেপ্টেম্বর মাসে ৪৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৭ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৬৮২ জন।
এর মধ্যে কেবল ১৫১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৪৩ জনের। মোট দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৩.৮৭ শতাংশ এবং নিহতের হার ৩৪.২৯ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের দুর্ঘটনায় ১১২ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৬.৮৫ শতাংশ। যানবাহনভিত্তিক নিহতদের মধ্যে তিন চাকার যানের যাত্রী ৬৯ জন, বাসের যাত্রী ৩৫ জন, ট্রাক-কভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর আরোহী ২৩ জন, প্রাইভেটকার আরোহী ৮ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ১৬ জন এবং বাইসাইকেল ও রিকশা আরোহী ১১ জন।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৬১টি (৩৬.০৯%) জাতীয় মহাসড়কে, ১৩৯টি (৩১.১৬%) আঞ্চলিক সড়কে, ৫৭টি (১২.৭৮%) গ্রামীণ সড়কে এবং ৮৯টি (১৯.৯৫%) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। মোট দুর্ঘটনার মধ্যে ৯২টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭১টি যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ হারানো, ১১৯টি পথচারীকে চাপা দেওয়া বা ধাক্কা দেওয়া এবং ৫৮টি পেছন থেকে ধাক্কার ঘটনা। এছাড়া ৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে অন্যান্য কারণে।
সেপ্টেম্বরের দুর্ঘটনায় মোট ৬৬১টি যানবাহন সম্পৃক্ত ছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৫৯টি মোটরসাইকেল। এছাড়া ১১৯টি বাস, ১০৪টি ট্রাক, ১০১টি তিন চাকার যান, স্থানীয়ভাবে তৈরি ৪৪টি যানবাহন, ২১টি কভার্ডভ্যান, ১৮টি পিকআপ, ৭টি মাইক্রোবাস, ১৬টি প্রাইভেটকার এবং বাকিগুলো অন্যান্য যানবাহন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বিশ্লেষণে বলা হয়, দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক অবকাঠামো, যানবাহনের বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল এবং তরুণ-যুবাদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো।
সংস্থাটির মতে, দুর্ঘটনা রোধে নজরদারি বাড়ানো এবং চালকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি। তারা বলছে, যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে। তাই সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।
এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন শ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।