কোরআন অবমাননার অভিযোগে কারাগারে যাওয়া অপূর্ব পালকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ) থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক ফয়জুল্লাহ ওয়াসিফ জানিয়েছেন, অভিযোগ ওঠা শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। শৃঙ্খলা কমিটির এক জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে পুলিশ ওই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পবিত্র কোরআন অবমাননারত অবস্থায় প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখতে পান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা বিভাগ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহাবস্থানের পরিবেশ প্রশংসনীয়ভাবে রক্ষা করেছেন।
অপূর্ব নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই বিভাগের প্রভাষক আসিফ বিন আলী জানিয়েছেন, অপূর্ব আগেও সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন।
কোরআন অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় রোববার আদালত অপূর্ব পালকে কারাগারে পাঠায়। মামলার বাদী ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসমত আলী, আর তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন এসআই চাঁদ মিয়া।
শনিবার রাতে কয়েকটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে অপূর্ব পাল কোরআন অবমাননা করেছেন বলে বিভিন্ন পোস্টে অভিযোগ তোলা হয়। এসব ভিডিও ও পোস্টের মাধ্যমে তার গ্রেপ্তারের দাবিও ওঠে।
রাত ১টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অপূর্ব পালের বাসার সামনে ক্ষুব্ধ লোকজন জড়ো হতে থাকেন। খবর পেয়ে ভাটারা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং তাকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করে।
পুলিশ জনতার সহায়তা চাইলে তারা সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। তবে অপূর্বকে আটক করে থানায় নেওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা তাকে মারধর শুরু করে। পুলিশ জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তারাও পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে বাড়তি পুলিশ সদস্য ডাকা হয়। মারধরের মধ্যেই রাত পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ অপূর্বকে হেফাজতে নিতে সক্ষম হয়। পরে কোরআন অবমাননার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।