রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট’ বিষয়ে ঐকমত্য

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো গণভোট আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছে। তিনি রোববার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।

এর আগে ঐকমত্য কমিশন চার দিন ধরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছিল।

আলী রীয়াজ বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট আয়োজনের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলই একমত হয়েছে। এটি জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম পদক্ষেপ।”

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে এই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে, অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ কিছু দল চাইছে নির্বাচনের আগে এই সনদ বাস্তবায়ন হোক। মূলত এই বিরোধের কারণে এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। এ অচলাবস্থা নিরসনে গণভোটের প্রস্তাব দেয় জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলো।

প্রাথমিকভাবে গণভোটের বিরোধিতা করলেও পরে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে। তারা বলছে, গণভোট হতে পারে, তবে তা সংসদ নির্বাচনের দিনেই অনুষ্ঠিত হবে।

এমন প্রেক্ষাপটে গণভোট নিয়ে ঐকমত্যের খবর এলেও, আলী রীয়াজের ব্রিফিংয়ে গণভোট কখন হবে তা স্পষ্ট হয়নি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘অন্যান্য বিষয়েও’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এইভাবে ঐকমত্য স্থাপন হবে।

তিনি আরও জানান, কমিশন শিগগিরই সনদ বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা তৈরি করে সরকারের কাছে দেবে। আলী রীয়াজ বলেন, “সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। আজকের আলোচনায় সনদ বাস্তবায়নে ১০৬ অনুচ্ছেদের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন নাও হতে পারে বলে মনে করছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল।”

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে যে আইনসভা গঠিত হবে, এবং সে আইনসভা জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে যে সব সংস্কার করবে, তা যেন টেকসই হয়, সে ব্যাপারেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কার্যত ঐকমত্য রয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

বৈঠকে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।