দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১ হাজার ৪২ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর মশাবাহিত এ রোগে এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যা ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা—দুটিই এবার সর্বোচ্চ।
এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর ৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর ২৮ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে সর্বাধিক ৮৪৫ জন ভর্তি হয়েছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় ঢাকার বাইরের অনেক জেলার তথ্য এমআইএস শাখায় পৌঁছায় না। রোববার এসব তথ্য যুক্ত হয়, ফলে সাধারণত সেদিন মৃত্যুর সংখ্যা ও ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়।
রোববারের বুলেটিন অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৯০৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১২ জনে।
সবশেষ মারা যাওয়া ৯ জনের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন, ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালে একজন, মিটফোর্ড হাসপাতালে একজন এবং কক্সবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহতদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও পাঁচজন নারী; তাদের বয়স ১৭ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং মৃত্যুও ঘটে সর্বাধিক। ওই মাসে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন ভর্তি হন এবং মৃত্যু হয় ৭৬ জনের।
অক্টোবরের প্রথম চার দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৫৬৫ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। জুলাই মাসে ভর্তি হয়েছিল ১০ হাজার ৬৮৪ জন। জানুয়ারিতে ভর্তি হন ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন এবং অগাস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন।
জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে ৪১ জন মারা যান। তার আগে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে মাসে ৩ জন, জুনে ১৯ জন এবং অগাস্টে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। মার্চ মাসে মৃত্যুর কোনো তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে সর্বাধিক ৩২২ জন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ১৯৮ জন, ময়মনসিংহে ৪১ জন, চট্টগ্রামে ১০৪ জন, খুলনায় ৭২ জন, রাজশাহীতে ৮২ জন, রংপুরে ২৩ জন, বরিশালে ১৯৫ জন এবং সিলেটে ৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৪৩৯ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৮৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৬৫২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সর্বাধিক—৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন, এবং সে বছরই সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।