ইসরায়েলি সরকার আজ শুক্রবার ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে। এর ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পথ খুলে গেল। আর এর পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
মধ্যস্থতাকারীরা চুক্তির বিষয়ে সমঝোতার ঘোষণা দেওয়ার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা আজ সকালে তা অনুমোদন করে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দীদের ছেড়ে দেবে। পাশাপাশি ধাপে ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ইংরেজি ভাষার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকার এইমাত্র জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে চুক্তির কাঠামো অনুমোদন করেছে।’
যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণার পর ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের অবসানে একে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
হামাসের নির্বাসিত গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীর কাছ থেকে তিনি যুদ্ধের অবসানের নিশ্চয়তা পেয়েছেন।
ইসরায়েল সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, চুক্তিটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর হবে। এর পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
গাজায় বর্তমানে ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মি জীবিত এবং ২৬ জন মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরও দুজনের বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। হামাস জানিয়েছে, জীবিতদের মুক্তি দেওয়ার চেয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধারে বেশি সময় লাগতে পারে।
দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় লাখ লাখ ফিলিস্তিনি গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তাঁরা বর্তমানে বিভিন্ন শরণার্থীশিবিরে তাঁবুতে বসবাস করছেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে খাদ্য ও চিকিৎসাসহায়তা বহনকারী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ করবে।
গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মিমুক্তি–সংক্রান্ত তাঁর ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে হামাস ও ইসরায়েল একমত হয়েছে। ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি, ইসরায়েল ও হামাস উভয়ে আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সই করেছে।’