এমিরেটাস অধ্যাপক ও সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহ শেষবারের মতো নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অপরাজেয় বাংলার সামনে তাকে শেষ বিদায় জানাবেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এরপর সকাল ১১টায় মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
‘ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট অ্যালামনাই সোসাইটির’ ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুর রাজ্জাক জানান, জোহর নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে অধ্যাপক মনজুরুল ইসলামের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম শুক্রবার বিকালে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
গত ৩ অক্টোবর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হলে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাতেই তার হার্টে দুটি রিং পরানো হয়। রোববার সন্ধ্যায় তার শারীরিক অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ হলে তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ‘ভেন্টিলেশন সাপোর্ট’ ছাড়াই তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছিলেন। তবে শুক্রবার সকালে অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়, কিন্তু আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জন্ম ১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে। তার বাবার নাম সৈয়দ আমীরুল ইসলাম এবং মা রাবেয়া খাতুন। ১৯৬৬ সালে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাসের পর সিলেট এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি। পরবর্তীতে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে, সেখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮১ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইয়েটস-এর কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অবসর গ্রহণের পর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) অধ্যাপনা করেন।
১৯৯৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক অর্জন করেন তিনি।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে— পুস্তক প্রকাশনা ও সম্পাদনা প্রসঙ্গ, থাকা না থাকার গল্প, কাচ ভাঙ্গা রাতের গল্প, অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প, আধখানা মানুষ্য, দিনরাত্রিগুলি, আজগুবি রাত, তিন পর্বের জীবন, নন্দনতত্ত্ব, কতিপয় প্রবন্ধ এবং অলস দিনের হাওয়া।