২০২৬ সালে রেকর্ড সর্বনিম্ন শরণার্থী নেবে যুক্তরাষ্ট্র: অগ্রাধিকার দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গদের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৬ অর্থবছরের জন্য শরণার্থী গ্রহণের সংখ্যা কমিয়ে রেকর্ড সর্বনিম্ন ৭ হাজার ৫০০ জনে নির্ধারণ করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক সরকারি নথিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

প্রকাশিত নথি অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী শরণার্থী নীতিতে পুনর্গঠনের অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন নীতির আওতায় মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গরাই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অগ্রাধিকার পাবেন।

ট্রাম্পের অভিযোগ, কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এ দাবি অস্বীকার করেছে।

নতুন নীতির কারণে বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ ও অশ্বেতাঙ্গদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দরজা কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর শরণার্থী গ্রহণের বার্ষিক নীতি নির্ধারণের সময় ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের শরণার্থী হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এরপর থেকেই তিনি আফ্রিকান শ্বেতাঙ্গদের যুক্তরাষ্ট্রে আনার উদ্যোগ নেন।

সমালোচনার মুখে পড়লেও, সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেই প্রায় ১৩৮ জন দক্ষিণ আফ্রিকান শ্বেতাঙ্গ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন বলে জানা গেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, “শরণার্থী নেওয়া হবে কেবল তখনই, যখন তা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোত্তম স্বার্থে হবে।”

এ ঘোষণার কিছুদিন পর থেকেই শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের যুক্তরাষ্ট্রে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সাম্প্রতিক ঘোষণায় ট্রাম্প বলেন, প্রশাসন এমন ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে, যারা নিজ দেশে অন্যায় বা অবৈধ বৈষম্যের শিকার।

সরকারি নথি অনুযায়ী, ইউরোপের কিছু নাগরিকও শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকার পেতে পারেন, যদি তারা অভিবাসনবিরোধী মত বা জনতাবাদী রাজনৈতিক দলকে সমর্থনের কারণে নিপীড়নের মুখে পড়েন।

তবে ঘোষণায় ইউরোপীয় বা অন্য কারও নাম নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের আইনে শরণার্থী সীমা নির্ধারণের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা বাধ্যতামূলক হলেও, ডেমোক্র্যাট সদস্যদের দাবি—৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এমন কোনও বৈঠক হয়নি।

বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে কংগ্রেস সদস্য জেমি রাসকিন, সিনেটর ডিক ডারবিন এবং অন্যান্য ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ভুলভাবে নেওয়া, অবৈধ ও অকার্যকর।