যুক্তরাজ্যের রিফর্ম ইউকে পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজে সম্প্রতি পূর্ব লন্ডনের রাস্তায় মুখোশ পরা মুসলিম বিক্ষোভকারীদের বিদেশি আগ্রাসী বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করেছেন।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপলে শনিবার অনুষ্ঠিত বর্ণবিরোধী বিক্ষোভে সারি সারি মুখোশধারী মানুষদের দেখা “ভয়ঙ্কর” ছিল। তার ভাষায়, “এদের দেখে মনে হয়েছে যেন লন্ডনের রাস্তায় বিদেশি আক্রমণকারী বাহিনী মার্চ করছে।”
শনিবার টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল টাউনহল ঘিরে এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিশাল সমাবেশ ও পদযাত্রা হয়। পুলিশ সেদিন কিংডম ইনডিপেনডেন্স পার্টি (ইউকিপ)-এর কর্মসূচি নিষিদ্ধ করলে প্রতিবাদে দলে দলে মুখোশধারী মুসলিম বিক্ষোভকারীরা হোয়াইট হলে নেমে আসে।
বিক্ষোভকারীরা ঐক্য প্রদর্শনের মাধ্যমে বর্ণবাদ, সহিংসতা ও বিভেদের প্রতিবাদ জানায়। কালো পোশাক, হুডি এবং মুখ ঢাকা অবস্থায় তারা রাস্তায় মিছিল করে। স্থানীয় মুসলিম নাগরিকদের পাশাপাশি বাংলাদেশি কমিউনিটির বহু মানুষও এই সমাবেশে অংশ নেন।
হোয়াইটহল এলাকায় পদযাত্রার সময় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে স্লোগান দেয়— “আমরা আমাদের সব শহীদকে সম্মান জানাব”, “আল্লাহু আকবর”, এবং “জায়নবাদীরা আমাদের রাস্তা থেকে সরে যাক।” হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের সামনে তারা নামাজও আদায় করে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফারাজে বলেন, এমন দৃশ্য তিনি জীবনে খুব কমই দেখেছেন। তার মতে, “কালো পোশাকধারী সেই জনসমাগম ছিল আমার দেখা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দৃশ্যগুলোর একটি।”
তিনি আরও দাবি করেন, টাওয়ার হ্যামলেটসে এমন এক ধরনের ‘মোক্ষম বর্ণবাদ’ চলছে, যা যুক্তরাজ্যের অন্য যেকোনো স্থানের তুলনায় প্রবল।
বিক্ষোভে দেওয়া স্লোগানগুলো সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ফারাজে বলেন, “এটা এমন ভয়ভীতি সৃষ্টি করছে যেন ইহুদি জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করারই আহ্বান জানানো হচ্ছে।”
এ সময় তিনি তার দলের এমপি সারা পোচিনকে ঘিরে বিতর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন। ডেইলি মেইল জানায়, পোচিন অভিযোগ করেছিলেন— টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয়দের উপস্থিতি ‘অতিরিক্ত’। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ফারাজে বলেন, “সারা ঠিকভাবে বলেননি; শব্দচয়ন ও বাক্যবিন্যাস সঠিক ছিল না।” তবে তিনি পোচিনের মন্তব্যকে বর্ণবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেননি।
