গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের শনাক্তে ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
শনিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “জড়িতরা যে এ জাতি থেকে বিচ্ছিন্ন, এ জাতির মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন, সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য হলেও আমাদের ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন করতে হবে।”
তিনি জানান, এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তিনি এবং প্রধান বিচারপতি একটি দল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাবেন।
“আমাদের সঙ্গে ইউএনডিপিসহ আরও অনেকে সম্পৃক্ত আছেন। আমরা ফিরে এসে আপনাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা শেয়ার করব,” বলেন তিনি।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, “যারা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো ঘৃণ্য অপরাধ করেছে, তাদের উপযুক্ত, যথেষ্ট পরিমাণ শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই আমাদের করতে হবে।”
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট প্রস্তাবিত ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার’ অধ্যাদেশ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় এ সভার আয়োজন করে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা এটা কেন করে যেতে চাই, আমরা ঠিক নিশ্চিত নই, আমাদের পরে যারা আসবে, তারা এ ধরনের আইন করবে কিনা। আর আমরা এ আইনটা খুব শক্তিশালী করতে চাই। এখানে যে কমিশন আছে, সেটাকেও শক্তিশালী করতে চাই। কারণ আমরা এটাও নিশ্চিত নই, পরের সরকার যদি গুমের কোনো আইন করে, সেটা শক্তিশালী করবে কিনা।”
তিনি আরও বলেন, “অতীত অপরাধকে কীভাবে আনা যায়, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ, এটা অবশ্যই আমরা বিবেচনা করব।”
সভায় বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আইনটা যে পরিপ্রেক্ষিতে করা হচ্ছে, এর যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে, আইনটা করার ক্ষেত্রে ওই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটা উল্লেখ করা হয়নি। আমরা কেন এতদিন পরে গিয়ে জাতিসংঘের সনদটায় সই করলাম, সে প্রেক্ষাপটটা এখানে থাকা উচিত বলে মনে করি।”
তিনি বলেন, “গুমের একটা সংজ্ঞা দেওয়াও প্রয়োজন। যদি প্রমাণ করতে না পারা যায়, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই ঘটেছে, এটাই ধরে নেওয়া হবে। যখন সে জানবে, তার অধীন কেউ একটা অপরাধ করলে তাকেও এটার জন্য ধরা হবে, তাহলে ওপর থেকে আর এ ধরনের কমান্ড আসবে না।”