মমতাজের রিমান্ড শুনানিতে আদালতে হট্টগোল

সাবেক সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমের রিমান্ড শুনানিকে ঘিরে আদালত কক্ষে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই ঘটনা ঘটে।

জুলাই অভ্যুত্থানের সময়কার একটি হত্যা মামলায় সোমবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

পরদিন দুপুরে তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। বিকাল ৩টা ৪ মিনিটে তাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এজলাসে তোলা হয়।

ওই সময় আদালতে অন্য একটি মামলার শুনানি চলছিল। মমতাজকে আনা হলে পুরো এজলাস কক্ষ পূর্ণ হয়ে যায় এবং হট্টগোল শুরু হয়।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আইনজীবীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শুনানির সময় কেউ কোনো ধরনের সাউন্ড করবেন না। সাংবাদিকরা আসামির সঙ্গে কথা বলবেন না, ছবি তুলবেন না। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বক্তব্য রাখবেন, তবে উচ্ছৃঙ্খল ভাষা পরিহার করবেন।”

বেলা ৩টা ৭ মিনিটে শুনানি শুরু হলে মমতাজের হেলমেট খোলা হয়। এ সময় আইনজীবীরা তার মাস্ক খোলার দাবি জানান। দাবি অনুযায়ী মাস্ক খোলেন মমতাজ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মনিরুল ইসলাম আদালতকে জানান, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মমতাজকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

রাষ্ট্রপক্ষে ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, “আমরা জাতি হিসেবে আবেগপ্রবণ। শিল্পীদের ভালোবাসি। কিন্তু এই আসামি জনগণের ভালোবাসাকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহযোগিতা করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “সংসদের অধিবেশনে যেখানে মিনিটে কোটি টাকা খরচ হয়, সেখানে সে গান গেয়েছেন। সংসদে তোফায়েল-আমুসহ কেউ কটূ কথা বলেননি, কিন্তু মমতাজ বলেছেন—‘খালেদার বাপের নাম কী।’”

রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শেষে আদালত আসামিপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনতে চান। তবে আইনজীবীকে খুঁজে পেতে সময় লাগে।

মমতাজকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তার আইনজীবী রেজাউল করিমকে শনাক্ত করেন এবং ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেন।

তবে রেজাউল করিম আদালতকে জানান, “আজ আমার কোনো বক্তব্য নেই।”

পরে আদালত মমতাজ বেগমের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শুনানির সময় জনাকীর্ণ এজলাসে গালে হাত দিয়ে বিষণ্নভাবে রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনতে দেখা যায় মমতাজকে।

রিমান্ডের আদেশের পর আইনজীবীরা সাত দিনের রিমান্ড দাবি করেন এবং তাকে লিফটে না নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেওয়ার দাবি তোলেন।

তাদের দাবি, বিএনপির নেতাদের লিফটে নেওয়া হয়নি, মমতাজকেও সিঁড়ি দিয়ে নামানো হোক।

এই দাবিতে এজলাস গেটের সামনে অবস্থান নেন আইনজীবীরা। পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. জাহিদুল ইসলাম পরিস্থিতি বিবেচনায় আসামিকে কিছুক্ষণ কাঠগড়ায় রাখার অনুরোধ জানান।

বিচারক তাকে লিফটে নামানোর অনুমতি দিলে নিরাপত্তা জোরদার করে মমতাজকে লিফটে করে নিচে নামানো হয়।

নিচে এসেও আইনজীবীরা অবস্থান নেন। এরপর তাকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *