জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা এক অলিখিত চুক্তির মধ্যে ছিলাম। আমাদের অনেক দ্বিমত থাকবে, কিন্তু তার প্রকাশ ঘটবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় আমরা আশা করেছিলাম, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর হামলা-মামলার সংস্কৃতি আর ফিরে আসবে না। কিন্তু শিবির সেই অলিখিত চুক্তি ভেঙেছে।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতারা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের হামলার নিন্দা জানান সংগঠনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড।
তিনি বলেন, ‘তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামে পুলিশের উপস্থিতিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে। চট্টগ্রামে হামলার ঘটনায় একজনকে আটক করলে থানায় মব সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ এবং শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়।
মশিউর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার দীর্ঘ শাসনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর এখন জনগণের প্রধান এজেন্ডা হয়ে উঠেছে। আমরা দেখেছি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তুলতে সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমরা অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করেছি, শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে কোনো সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়নি। অথচ জাতি গঠনে শিক্ষাব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। আমরা ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ, কার্যকর সংস্কার এবং শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবিতে সারা দেশে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ ও শিক্ষা সংলাপের আয়োজন করেছি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের দাবিসমূহের পক্ষে তাদের নৈতিক জনসমর্থন জানিয়েছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির সঙ্গে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন অর্থ সম্পাদক ফারহানা মুনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা নগর শাখার সভাপতি আল-আমিন রহমানসহ আরও নেতৃবৃন্দ।
