জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম কারাগারে

জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এস এম আনোয়ারা বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেন।

আনোয়ারা বেগমের আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা দায়ের করা এক হত্যাচেষ্টার মামলায় আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন জানানো হয়।

আসামিপক্ষ আদালতকে জানায়, আনোয়ারা বেগম ৩৫ বছর ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন এবং ২০২১ সালে অবসরে যান। তিনি অবসরের পর কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না। মামলায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে হয়রানির উদ্দেশ্যে। তিনি জামিন পেলে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই।

তবে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত আনোয়ারা বেগমের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে মামলাটি রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় দায়ের করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই রায়সাহেব বাজারের স্টার হোটেলের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে’ ছাত্রদল ও অন্যান্য আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়।

অভিযোগে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গুলি চালায়। এতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে এবং বাঁ চোখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এ ঘটনায় সুজন মোল্লা বাদী হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এ কে এম হাসান মাহমুদুল কবীর লিখিতভাবে আদালতকে জানান, ঘটনার সঙ্গে আনোয়ারা বেগম জড়িত।

সূত্রাপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা আনোয়ারা বেগমকে আটক করেন। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে।

আনোয়ারা বেগম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *