নতুন বাজেটে ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্লাটফর্ম সেবায় ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে অনলাইনে সিনেমা, সিরিজসহ বিভিন্ন কনটেন্ট দেখতে বাড়তি খরচ বহন করতে হবে দর্শকদের।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই শুল্ক ওটিটি ইন্ডাস্ট্রিকে ক্ষতির মুখে ফেলবে।
একটি ওটিটি প্লাটফর্মের প্রধান কনটেন্ট কর্মকর্তার মতে, “এটা দেশের ওটিটি ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিপদের কারণ হবে। এখনো এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ইন্ডাস্ট্রি হয়ে ওঠেনি, কেবলমাত্র চেষ্টা করছে। এরকম একটি আপগ্রোয়িং ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপ করলে তা ক্ষতিই ডেকে আনবে।”
তিনি আরও জানান, বর্তমানে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এর সঙ্গে যদি ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক যুক্ত হয়, তাহলে ওটিটি সাবস্ক্রিপশন ফি বাড়াতে হবে, যার বোঝা শেষ পর্যন্ত গ্রাহকের ওপরই পড়বে।
চরকির প্রধান নির্বাহী বলেন, “বিদেশি ওটিটির বড় বাজেটের কনটেন্টের সঙ্গে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হয়। এই শুল্ক বিদেশি ও দেশি প্লাটফর্মের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করব।”
তিনি জানান, “দেশে মাত্র কয়েকটি ওটিটি প্লাটফর্ম বিনিয়োগ করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এই সময়ে শুল্ক আরোপ করলে দাঁড়ানোই সম্ভব হবে না।”
স্টাটিস্টার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ওটিটি বাজার দাঁড়াবে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকায়।
চরকির প্রধান নির্বাহীর ভাষ্য, “বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী ৩০ কোটির বেশি বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের ওটিটি কনটেন্ট দেখে। এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে। অথচ সরকার এই দিক বিবেচনায় না নিয়ে শুল্ক আরোপ করে ইন্ডাস্ট্রিকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে।”
কোভিড মহামারির সময় ঘরবন্দি অবস্থায় বাংলাদেশেও ওটিটির জনপ্রিয়তা বাড়ে। দেশি প্লাটফর্মগুলো এখন নিয়মিত কনটেন্ট প্রদর্শন করছে, যেমন চরকি, বঙ্গ, বায়োস্কোপ, বিঞ্জ, আইস্ক্রিন, দীপ্ত প্লে। পাশাপাশি হইচই, নেটফ্লিক্সের মতো আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মগুলোও জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
‘তকদির’, ‘কন্ট্রাক্ট’, ‘মানি হানি’, ‘মহানগর’, ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’, ‘ঊণলৌকিক’, ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলমেন’ এর মতো ওয়েব সিরিজগুলো দেশজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।