বাড়তি করের বিনিময়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে আবাসন খাতে

আসন্ন ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ থাকছে। তবে এজন্য বর্তমানে নির্ধারিত করহারের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি কর দিতে হবে। সোমবার বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমে বাজেট উপস্থাপনকালে এ প্রস্তাব দেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বর্তমানে ঢাকার গুলশান মডেল টাউন, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা ও দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত ২০০ বর্গমিটার আয়তনের ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টে প্রতি বর্গমিটারে ৬ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে।

আগামী অর্থবছর থেকে এই হার বাড়িয়ে ভবন, ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে, যা প্রতি বর্গমিটারে দাঁড়ায় ২১ হাজার ৫৩০ টাকা। এটি বর্তমানের তুলনায় ২৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি।

এ ছাড়া এসব এলাকায় ২০০ বর্গমিটারের মধ্যে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে কর ধরা হয়েছে ৯০০ টাকা, অর্থাৎ বর্গমিটারে ৯ হাজার ৬৮৮ দশমিক ৫ টাকা।

বর্তমানে একই এলাকায় অনধিক ২০০ বর্গমিটার আয়তনের ভবন বা অ্যাপার্টমেন্ট কিনলে প্রতি বর্গমিটারে ৪ হাজার টাকা খরচে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ রয়েছে। তবে নতুন বাজেটে এ হার বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুটে ১ হাজার ৮০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা বর্গমিটারে ১৯ হাজার ৩৭৭ টাকা। এতে করের হার বেড়েছে ৩৮৪ শতাংশ পর্যন্ত।

এভাবে এলাকাভেদে প্রতিটি ক্ষেত্রেই করহার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

দুই অর্থবছর বিরতির পর বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আবার কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ চালু হয়। তখন ১৫ শতাংশ কর দিয়ে নগদ অর্থ, শেয়ারসহ যেকোনো বিনিয়োগ বৈধ করা যায় বিনা প্রশ্নে। একইসঙ্গে ফ্ল্যাট বা জমি কেনার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত কর দিয়ে সম্পদ বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তখন থেকেই বলা হচ্ছিল, কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ আর থাকবে না। গত সেপ্টেম্বরে সরকার এ সুযোগ বাতিল করলেও আবাসন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ সাদা করার বিধান তখন বলবৎ থাকে।

এবার করের হার বাড়িয়ে হলেও সরকার জানাল, সেই অবস্থান থেকে তারা সরে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *