ঋতুপর্ণার জোড়া গোলে এএফসি নারী এশিয়ান কাপে দারুণ পথে বাংলাদেশ

ফ্রি কিক থেকে প্রথম প্রচেষ্টা রক্ষণ দেয়ালে আটকে গেলেও ফিরতি শটে জাল খুঁজে নেন ঋতুপর্ণা চাকমা। মিয়ানমারের টানা চাপ সামলে সেই গোল ধরে রেখে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধেও ঋতুপর্ণার নৈপুণ্য ছড়ায়। শক্তিশালী মিয়ানমারকে হারিয়ে এএফসি উইমেন’স এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ওঠার পথে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ নারী দল।

বুধবার ইয়াংগুনের থুয়ান্না স্টেডিয়ামে স্বাগতিক মিয়ানমারকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ১৮তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৭২তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ঋতুপর্ণা। ম্যাচের শেষ দিকে ব্যবধান কমান মিয়ানমারের উইন উইন।

প্রথম ম্যাচে বাহরাইনকে ৭-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপে শীর্ষে অবস্থান করছে পিটার জেমস বাটলারের দল। অন্যদিকে, তুর্কমেনিস্তানকে ৮-০ গোলে হারানো মিয়ানমারের পয়েন্ট ৩।

গ্রুপের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আগামী শনিবার তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচে প্রত্যাশিত ফল পেলে ২০২৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য মূল পর্ব নিশ্চিত হবে।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারের বিপক্ষে অতীতে ৫-০ ব্যবধানে হারের অভিজ্ঞতা ছিল বাংলাদেশের। এবার খেলাটাও ছিল প্রতিপক্ষের মাঠে ও দর্শকের সামনে। তবে বাহরাইনের বিপক্ষে বড় জয়ের আত্মবিশ্বাস ছিল দলটির পুঁজি।

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চিত্র ফুটে ওঠে। দ্বিতীয় মিনিটে মনিকা চাকমার ক্রস জমা করেন মিয়ানমার গোলকিপার। পরের মিনিটেই শামসুন্নাহার সিনিয়র প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখে দেন বক্সের মধ্যে।

১২তম মিনিটে মিয়ানমারের থ্রু পাস ঠেকাতে পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে এসে বল ক্লিয়ার করেন রুপনা চাকমা।

১৮তম মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়র ফাউলের শিকার হলে ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণার শট দেয়ালে বাধা পেলেও ফিরতি শট নিচু করে জালে পাঠান তিনি।

২৪তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পান শামসুন্নাহার জুনিয়র। ঋতুপর্ণার ক্রসে ছোট বক্সে ট্যাপ করলেও বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে।

৩১তম মিনিটে মিয়ানমারের ফিউ ফউ উইনের দূরপাল্লার ফ্রি কিক সহজে ধরেন রুপনা। ৩৭তম মিনিটে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিপদে ফেলেছিলেন রুপনা, তবে খিন মো মো তুনের শট বাইরে গেলে রক্ষা পায় বাংলাদেশ।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মিয়ানমারের এক প্রচেষ্টা ক্রসবারে লাগে। শামসুন্নাহার জুনিয়র ট্যাকলে পড়ে ব্যথা পেলেও কিছুক্ষণ চিকিৎসার পর মাঠে ফেরেন। এরপর বিরতির বাঁশি বাজে।

দ্বিতীয়ার্ধে মিয়ানমার সমতায় ফেরার চেষ্টা বাড়ায়। শান থ থ’র একাধিক আক্রমণ প্রতিহত করেন শামসুন্নাহার সিনিয়র ও আফঈদা খন্দকাররা।

৭২তম মিনিটে বক্সের কাছ থেকে বাম পায়ে ঋতুপর্ণার শটে দ্বিতীয় গোল পায় বাংলাদেশ। বল গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে জালে যায়।

৭৭তম মিনিটে আবারও রুপনার দারুণ সেভ। মাইয়াত এহিনের বিপজ্জনক আগ্রাসন ঠেকিয়ে দেন এই অভিজ্ঞ গোলকিপার।

৮৮তম মিনিটে মিয়ানমার ব্যবধান কমায়। সতীর্থের আড়াআড়ি পাস থেকে উইন উইন টোকায় বল জালে পাঠান।

শেষ মুহূর্তে চাপ সামলেও জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। শেষ বাঁশি বাজতেই খেলোয়াড়েরা আনন্দে মেতে ওঠেন দুর্দান্ত এই জয়ের মাধ্যমে।