স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো মহাসড়কে ক্লাস নিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দ্বিতীয় দিনের মতো মহাসড়কে পাঠদান করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুই ঘণ্টা পাবনা-ঢাকা মহাসড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন ৩ এর সামনে রাস্তা বন্ধ করে এ পাঠদান চলে।

একইসঙ্গে শিক্ষক ও কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল এবং মানববন্ধন করেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়ে, যাত্রী ও চালকদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।

স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবেই দ্বিতীয় দিনের মতো এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভে বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর নজরুল ইসলাম, সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ইয়াত সিংহ শুভ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সবুজ মণ্ডল ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাবেদ ইকবালসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।

ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর নজরুল ইসলাম বলেন, “নয় বছর পেরিয়ে গেলেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাস পায়নি। ভাড়া ভবনে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম কোনোরকমে চলছে, কিন্তু শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পাচ্ছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ৫১৯ কোটি টাকার প্রকল্প পাঠানো হলেও এখনো একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

“বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি সহযোগিতা পেলেও আমরা কেন বঞ্চিত হচ্ছি, তা বোঝা যাচ্ছে না।”

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষকরা। বুধবার বিকেলে মহাসড়কে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান তারা।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২২৫ একর জায়গা বরাদ্দ করা হয়।

বর্তমানে বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সঙ্গীত ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। রয়েছে ৩৪ জন শিক্ষক, ৫৪ কর্মকর্তা ও ১০৭ জন কর্মচারী।

শাহজাদপুর মহিলা কলেজ, সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ডিগ্রি কলেজ এবং দুটি ভাড়া বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রশাসন একটি প্রকল্প জমা দিলেও তা অনুমোদন পায়নি।

সর্বশেষ ২০২৫ সালে ১০০ একর জমির ওপর ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়, যা একনেকে অনুমোদনের নীতিগত সিদ্ধান্তের পর্যায়ে ছিল।

এ প্রকল্প এলাকা গত ১৬ জুন পরিদর্শনে যান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পরবর্তীতে তিনি ওই স্থানে স্থায়ী ক্যাম্পাস না করার সুপারিশ করেন।

এরপর থেকেই আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও জানিয়ে আসছেন তারা।