বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ধাওয়া ও মারধরের কারণে ছাত্র-জনতার অনশন কর্মসূচি আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্যাহত হয়েছে। বেলা পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের তিন দফা দাবিতে গত শুক্রবার থেকে বরিশাল–ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ ও হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অনশন চলছিল। আজ সকালেই তিন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মেডিসিন ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা সেখানে কর্মীদের সঙ্গে ঝগড়া ও দুর্ব্যবহার করেন।
হাসপাতালের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বাইরে এসে বিক্ষোভ শুরু করলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কর্মকর্তা–কর্মচারীদের তোপের মুখে আন্দোলনকারীরা সেখান থেকে সরে যায়। এ সময় একজন আন্দোলনকারী ধাওয়া করা ও মারধরের শিকার হন। আন্দোলনের সংগঠক মহিউদ্দিন রনি ঘটনাস্থল থেকে সরে যান। পরে হাসপাতালের কর্মচারীরা সামনের রোডে বিক্ষোভ চালান এবং রনির বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক হাসপাতাল কর্মচারী বলেন, ‘১৫ দিন ধরে আন্দোলনের নামে হাসপাতালের চিকিৎসাব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। কিছু শিক্ষার্থী অযৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে আমাদের মারধর করেছেন। এজন্য আমরা রাস্তায় প্রতিবাদে নামতে বাধ্য হয়েছি।’
বেলা দেড়টা পর্যন্ত উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করলেও সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে ১৭ দিন ধরে বরিশালে নানা কর্মসূচি চলছিল। শুক্রবার থেকে ছয় দিন বরিশাল–ঢাকা মহাসড়ক সাড়ে ২৯ ঘণ্টা বন্ধ ছিল, ফলে বিভাগীয় যাত্রী ও চালকরা দুর্ভোগে পড়েন।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরিশালে এসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, চিকিৎসক, নাগরিক সমাজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সভা করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং হাসপাতালের পরিচালক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
ছাত্র-জনতার দাবিগুলো হলো:
- সরকারি হাসপাতালগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নিয়োগ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা।
- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ হাসপাতালগুলিতে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি, দলীয় চিকিৎসকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ডিজিটাল অটোমেশন ও স্বচ্ছ জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
- স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনকে জনগণের ভোগান্তির বিষয় শুনে তদন্ত ও সুপারিশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জোর পদক্ষেপ নেওয়া।