বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে চরম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তিনি বলেন, “দেশনেত্রীকে যে কক্ষে রাখা হয়েছিল, সেখানে ইঁদুর ও পোকামাকড় দৌড়াদৌড়ি করতো। কয়েকজন ডেপুটি জেলার তাকে অন্যায়ভাবে ছাদের একটি কক্ষে রেখেছিল।”
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, “আজকের এই অনুষ্ঠানে আমি মনে করি, খালেদা জিয়াকে কারাগারে যে অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে, তার সঙ্গে দায়ীদের বিচার হওয়া উচিত।”
খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সকাল নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মির্জা আব্বাস তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়ার দৃঢ় মনোবল, গণতন্ত্রের প্রতি আপসহীন নেতৃত্ব এবং নেতাকর্মীদের প্রতি অসীম ভালোবাসা ও স্নেহের কথা তুলে ধরেন।
২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে যান। পুরনো কারাগারে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বিনা চিকিৎসায় রাখার ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবার কয়েক দফা আবেদন করলেও তা নাকচ করা হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসায় রাখা হয়। পটপরিবর্তনের পর ৬ অগাস্ট খালেদা জিয়া সাজা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হন।
খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের ১৫ অগাস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ সন্তান। স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯৮১ সালের ৩০ মে হত্যার পর রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৯১–১৯৯৬, ১৯৯৬ ও ২০০১–২০০৬ সালের তিন দফা বিএনপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদ ও এতিমখানা-মাদ্রাসায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা হয়। সারাদেশে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলের চেয়ারম্যানের আরোগ্য কামনায় একই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। নয়া পল্টনের মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান এবং অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।