মালয়েশিয়ায় আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মামলা

মালয়েশিয়ায় আইএসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে দুই প্রবাসী বাংলাদেশির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মো. মামুন আলীর বয়স ৩১ বছর এবং রেফাত বিশাতের বয়স ২৭ বছর। শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়।

মামুন আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, তিনি ‘সাইফুল্লাহ আলম’ নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে আইএসকে সহায়তা করেছেন। দেশটির দণ্ডবিধি অনুযায়ী, প্রমাণিত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৩০ বছরের জেল এবং জরিমানা হতে পারে।

অন্যদিকে, রেফাতের মোবাইলে আইএসের পতাকার ছবি পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়ার আইনে এটি প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে।

শুনানির সুবিধার জন্য আদালত একজন দোভাষী নিযুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর মামলাগুলো পুনরায় উঠবে।

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পরিচালিত অভিযানে জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়া ৩৬ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে। দেশটির পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, আটকরা মূলত কারখানা, নির্মাণ ও সেবা খাতে কর্মরত ছিলেন। তারা একটি চক্র গড়ে অন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে থেকে সদস্য সংগ্রহ ও উগ্রবাদী মতাদর্শ ছড়াচ্ছিল।

মালয়েশিয়া পুলিশ জানিয়েছে, ওই চক্র আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে আইএসের জন্য অর্থ প্রেরণ করত। ‘গেরাকান মিলিটান র‌্যাডিকাল বাংলাদেশ’ বা ‘জিএমআরবি’ নামে পরিচিত এই চক্র হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে সদস্য সংগ্রহ ও উগ্র মতবাদের প্রচার করত।

আটকদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মামলা করা হয়, ১৫ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছিল। এই প্রক্রিয়ায় নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও জাহেদ আহমেদ ৩ জুলাই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। বিমানবন্দর থেকে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেন এবং পরে মামলা রেকর্ড করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ ও প্রচার-প্ররোচনা চালিয়েছেন। তারা জননিরাপত্তা ও জনসাধারণের আতঙ্ক সৃষ্টি করতে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। সংগৃহীত তহবিল ই-ওয়ালেট ও আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে অন্যান্য দেশে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার মাহফুজ নামের একজনকে ৮ জুলাই আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকার মহানগর হাকিম চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ড শুনানিতে তারা নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং জানান, অন্যের অপকর্মের জন্য তারা ফেঁসে গেছেন।