পিতৃত্বকালীন ছুটি সম্ভব, তবে শর্ত মানতে হবে: নুরজাহান বেগম

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম মনে করেন, চাকুরে পুরুষদের পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া যেতে পারে। তবে এজন্য তিনটি শর্ত মানতে হবে—শিশুকে সময় দেওয়া, শিশুর যত্নে সমান অংশগ্রহণ এবং শিশুর মায়ের সেবা করা। তিনি বলেন, “পিতৃত্বকালীন ছুটি দিতে হলে এসব শর্ত লিখিতভাবে পূরণ করতে হবে।”

এ কথা তিনি সোমবার বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত কর্মশালায় বলেন। তিনি আরও বলেন, মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে শিশুর জন্য যথাযথ দুধ নিশ্চিত হয়। দেশে দারিদ্র্যের কারণে অনেক মা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে পারেন না, যা শিশুর সুষম বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে।

কর্মশালায় উপস্থিত বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশন-বিবিএফের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. সারিয়া তাসনিম জানান, গত পাঁচ বছরে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর হার কমেছে। ২০১৭-১৮ সালে প্রথম ছয় মাস শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার ছিল ৬৫ শতাংশ, যা ২০২২ সালে কমে ৫৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ৬ থেকে ২৩ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের সাহচার্যও কমে ৩৫ শতাংশ থেকে ২৯ শতাংশে নেমে গেছে।

ডা. সারিয়া তাসনিম বলেন, মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর হার কমার কারণ হলো কৌশল ও উপকারিতার প্রচারণা না হওয়া, বিএমএস আইন ২০১৩ ও বিবিমালা ২০১৭ লঙ্ঘন, কর্মজীবি মায়েদের সীমিত ছুটি, এবং কর্মস্থলে বুকের দুধ সংরক্ষণের সুযোগ না থাকা।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, “মায়ের সঙ্গে শিশুর মাতৃদুগ্ধ সম্পর্ক নিবিড়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কৃত্রিম খাবারের ব্যবহার বাড়ছে।”

কর্মশালায় মিল্ক ব্যাংকের উদ্যোক্তা ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, দেশের মিল্ক ব্যাংক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে চলছে, তবে ধর্মীয় বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়ায় কাজ আটকে আছে। তিনি সরকারকে বিষয়টি সমাধানে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।

কর্মশালায় স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ডা. সারোয়ার বারী, বিবিএফের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস কে রায়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।