দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ রচনা ও সংকলন নিয়ে নতুন তথ্যের পর সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীসহ ১২৩ জনকে গোয়েন্দা নজরদারিতে নেওয়ার কথা। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন আত্মজীবনী সংকলনের জন্য ওই ব্যক্তিরা ফ্ল্যাট ও নগদ টাকা পেয়েছিলেন।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন রোববার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘’অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর দুদক ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা কার্যক্রম চলছে।’’
এক বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে পুলিশের বিশেষ শাখার নথি উদ্ধৃত করে বলা হয়, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারীর নেতৃত্বে ১২৩ সদস্যের একটি দল বইটি সংকলন করে। এই দলের সদস্যরা ধানমন্ডি, বসুন্ধরা ও মিরপুরে কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট এবং নগদ এক কোটি টাকা পান। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জাবেদ পাটোয়ারী স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান হিসেবে থাকা অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সান্নিধ্য নিশ্চিত করতে বইটি সংকলন করেছিলেন।
ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) বাংলা ও ইংরেজীতে বইটি প্রকাশ করে। এতে শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৬৭–১৯৬৯ সালে কারাগারে থাকার দিনগুলোর পাশাপাশি রাজনৈতিক জীবন ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ২০১২ সালের ৯ জুলাই বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সম্পাদনায় বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
আইজিপি হিসেবে অবসরের পর জাবেদ পাটোয়ারীকে ২০২০ সালে তিন বছরের জন্য সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত করা হয়, পরে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও পরবর্তী সরকার তার নিয়োগ বাতিল করে।
টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রচারের পর বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ নিয়ে বির্তক সৃষ্টি হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওবায়দুল্লাহ আল মামুন সাকিব দুদককে আইনি নোটিস দেন। তিনি জানান, নোটিসের পর কোনো ব্যবস্থা না হলে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হবে।
দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, ‘‘গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিগগিরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’
