বেসরকারি স্কুল ও কলেজে এমপিও নীতিমালায় বড় পরিবর্তন: জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ বিলুপ্ত, অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ যোগ্যতায় পরিবর্তন

বেসরকারি স্কুল ও কলেজের এমপিও নীতিমালায় গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধনীর মাধ্যমে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও উচ্চমাধ্যমিক কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদের নিয়োগ যোগ্যতায় পরিবর্তন এসেছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব দীপায়ন দাস শুভ জানান, “শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার অংশ পরিশিষ্ট-ঘ সংশোধন করে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। পরিশিষ্ট-ঘ পুরোটাই সংশোধন অনুযায়ী পরিবর্তন হবে।”

নীতিমালার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২১ সালের মার্চে জারি করা নীতিমালায় উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও উচ্চমাধ্যমিক কলেজে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে নতুন সংশোধনীতে এই পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। এর ফলে প্রভাষকরা সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সুযোগ পাবেন।

mpo rules

এই পদোন্নতির ফলে সাড়ে চার বছর পর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের প্রভাষকরা সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নীত হতে পারবেন। সহকারী অধ্যাপক পদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের মতোই রাখা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, শুধুমাত্র এমপিওভুক্ত প্রভাষকরা আট বছর সন্তোষজনক চাকরির পূর্তিতে প্যাটার্নভুক্ত প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক মোট পদের ৫০ শতাংশে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন, যা ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। অন্য প্রভাষকরা চাকরির ১০ বছর পূর্তিতে জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেড ৯ থেকে ৮ পাবেন এবং ধারাবাহিকভাবে এমপিওভুক্তির ১৬ বছর পূর্তিতে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। সহকারী অধ্যাপক পদের বেতন জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের মতোই গ্রেড-৬ ধরা হয়েছে।

উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের যোগ্যতাও পরিবর্তিত হয়েছে। আগে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে এমপিওভুক্ত উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়/কলেজের অধ্যক্ষ, ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ বা সহকারী অধ্যাপক পদে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ ১২ বছরের শিক্ষকতা প্রয়োজন হত।

এখন সংশোধনীর পর, স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা সমমানধারী ডিগ্রি অথবা চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি (সমগ্র শিক্ষা জীবনে একটির বেশি তৃতীয় শ্রেণি নয়) থাকলেই প্রধান শিক্ষক বা সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে থাকা শিক্ষকরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের সুযোগ পাবেন। এছাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে যথাক্রমে দুই/তিন বছরের অভিজ্ঞতা ও মোট ১৩-১৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকলেও তারা নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন।

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের যোগ্যতাও সংশোধন করা হয়েছে। আগে ইনডেক্সধারী প্রধান শিক্ষক বা সহকারী প্রধান শিক্ষক বা নিন্মমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে তিন বছরের অভিজ্ঞতা ও ১৫ বছরের মোট শিক্ষকতা থাকলেই নিয়োগ হতো। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে তিন বছরের অভিজ্ঞতা ও সর্বমোট ১৭ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকলেই তারা নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন।