সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে বিএনপি বরাবরই অবস্থান নিয়েছে এবং ভবিষতেও নেবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “ক্ষমতায় থাকুক আর না থাকুক, বিএনপি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মত চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করি না। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রশ্নে আমরা ছিলাম, আছি এবং থাকব।”

গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের ওপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন হয়েছে, ফ্যাসিবাদী আইনের মাধ্যমে যা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে—এসবের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি, করছি এবং করব। অন্যের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আমরা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি।”

সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হয় যে আমরা সংস্কারের বিরুদ্ধে। অথচ একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা, রাষ্ট্রপতি শাসন থেকে সংসদীয় শাসন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রবর্তন—এসব সংস্কার আমরাই এনেছি।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা আতঙ্কিত থাকি। মনে হয় কোন প্রেস কীভাবে আমার বক্তব্য নেবে, কীভাবে ছাপাবে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় তা কীভাবে উপস্থাপিত হবে—এসব চিন্তায় থাকতে হয়। সাম্প্রতিক কালে চরিত্র হননের প্রবণতা উদ্বেগজনক।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপিই প্রথম সংবাদপত্রের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করেছিল। তার আগে ছিল বাকশালের একদলীয় শাসন এবং সংবাদপত্র বন্ধ ছিল। আমরা বলি না, আমরা নিখুঁত। তবে নিঃসন্দেহে বলতে পারি, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় আমরা অনেক বেশি কাজ করেছি। আজকের যে আকাশমাধ্যম, সেটাও আমাদের সময়েই চালু হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে। আমি যা বলি সেটাই সঠিক—এই ধারণা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। একইভাবে সংবাদমাধ্যম আমার কথা বললে ঠিক, না বললে ভুল—এই মানসিকতা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে না।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দ্য নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবির, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *