প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ঘোষণা করেছেন, নির্বাচনের তারিখ অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শফিকুল আলম বলেন, “ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকল রাজনৈতিক দলকে প্রধান উপদেষ্টা পুনরায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কেউ যদি নির্বাচনের বিকল্প নিয়ে চিন্তা করে, সেটা হবে জাতির জন্য গভীর বিপজ্জনক।”
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে সব বৈঠকে সকল উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন না।
বৈঠকগুলোর সূচি ছিল এভাবে: আজ বিকেল সাড়ে চারটায় জামায়াতে ইসলামীর নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিএনপির নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কীভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করবে, তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। আগে এক দল বাসস্ট্যান্ড দখল করতো, এখন আরেকটি গ্রুপ নিয়েছে। সরকারকে দখলদারদের বিরুদ্ধে ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, “জুলাই সনদের আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচন হবে।”
বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি শক্তি নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। তবে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই। ঘোষিত তারিখেই নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টাও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে একমত হয়েছেন।
প্রেস সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনকে খুবই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বারবার উল্লেখ করেছেন, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের “ওয়ান অব দ্য বেস্ট ইলেকশনস” হবে।
জাতীয় পার্টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছিল কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি দল তাদের মতামত দিয়েছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা তা শুনেছেন।
শফিকুল আলম আরও বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে না পারে, সে বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা এবং সহযোগিতা চেয়েছেন।