অর্থ পাচারের অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের সহযোগী তাজবীর হাসান শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দরে আটক তাজবীরকে শনিবার দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. রাকিবুল হাসানের আদালতে তোলা হয়। বিমানবন্দর থানার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ১৪ অক্টোবর তার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারক বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ূম হোসেন নয়ন জানান।
পি কে হালদারের সহযোগী হিসেবে পরিচিত তাজবীর হাসান হালট্রিপ নামের ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাকে শুক্রবার মধ্যরাতে বিমানবন্দরে আটক করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এবং শনিবার দুপুরে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয় এবং আদালতে রিমান্ড চাওয়া হয়।
২০২০ সালে হালট্রিপের গ্রাহকদের কাছ থেকে শত কোটির বেশি টাকা নিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় তাজবীর। এতে বড় অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়েন অসংখ্য যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্সি। অপরদিকে অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বড় অঙ্কের অর্থ লোপাট ও পাচারের অভিযোগে আলোচিত পি কে হালদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় আইনজীবী কাইয়ূম হোসেন নয়ন বলেন, “তাজবীর হাসান পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এজন্য বিমানবন্দর থানার এসআই মো. সুমন মিয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছেন।”
আটকের সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) বলা হয়েছে, তুরস্কে যাওয়ার পথে তাজবীরকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি তুরস্কসহ আরও একটি দেশের নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট নিয়েছেন। গোয়েন্দা তথ্য মতে, তিনি পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সেজন্য তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, আসামির বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। তিনি পি কে হালদারের সঙ্গে বড় অঙ্কের টাকার ১০ শতাংশের অংশীদার। জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে আবেদনে বলা হয়েছে, পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে তিনি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত এবং একাধিক দেশের নাগরিক। সেজন্য আসামিকে ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদসহ আরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য সাত দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।
রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়েছে, তার সঙ্গে থাকা তুরস্কের পাসপোর্ট, একটি আইফোন ১৭ প্রো-ম্যাক্স ও একটি আইফোন ১৫ প্রো আলামত হিসেবে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
