বঙ্গবন্ধুর ছবি অপসারণের প্রস্তাব বিবেচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলার একটি প্রস্তাব ‘বিবেচনায়’ নেওয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ বিষয়ে মতামত জানতে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজের স্বাক্ষরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, আগামী শনিবারের মধ্যে এ বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহের লিখিত মতামত পাঠাতে হবে। মতামত কমিশনের ঠিকানা, ই-মেইল অথবা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠানো যাবে।

চিঠিতে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী ২০১১ সালের ১০ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনার ৪ (ক) অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করা হয়। ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয়সহ সব সরকারি ও আধা-সরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করতে হবে।

এই অনুচ্ছেদটি তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, “রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহের সঙ্গে জুলাই সনদ ২০২৫ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নবিষয়ক বৈঠক শেষ হয়েছে। এ পর্যায়ে কমিশন বিদ্যমান সংবিধানের ‘অনুচ্ছেদ ৪ (ক)’ বিলুপ্তির প্রস্তাব জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে।”

চিঠিতে আরও বলা হয়, এ বিষয়ে অতিরিক্ত তথ্য প্রয়োজন হলে কমিশনের ই-মেইল বা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা যাবে।

বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জানিয়েছেন, তারা কমিশনের এমন একটি চিঠি পেয়েছেন। তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশন থেকে এই চিঠি আমরা পেয়েছি।”

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকা না থাকার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে গত বছরের ৫ অগাস্টের পর। গত বছরের ১১ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানান, বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলা হয়েছে।

তিনি সেদিন এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে ৭১ পরবর্তী ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে, আমরা ৫ অগাস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি। ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু, জুলাইয়ের চেতনা বেঁচে থাকা পর্যন্ত তাকে আর কোথাও দেখা যাবে না।”

এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর, ২৪ নভেম্বর নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষ থেকেও বঙ্গবন্ধুর ছবি সরানো হয়। ওই দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের প্রথম ব্রিফিংয়ের আগে সম্মেলন কক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানো হয়।