ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: গুজবে জর্জরিত ভারতীয় মিডিয়া, পাল্টা হামলার দাবি প্রত্যাখ্যান ইসলামাবাদের
গত কয়েকদিন ধরে পেহেলগাঁওকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারত পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরসহ বিভিন্ন স্থানে মিসাইল ছোড়ে। জবাবে পাকিস্তান ভারতের বিমান লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালায়, যাতে অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়। এই ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়, নিয়ন্ত্রণ রেখায় শুরু হয় ব্যাপক গোলাবর্ষণ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভারত দাবি করে, জম্মু-কাশ্মির, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের তিনটি সেনা ঘাঁটিতে পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে। তবে ইসলামাবাদ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ভারতীয় মিডিয়ায় পাকিস্তানের পাল্টা হামলা নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়ায়। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, ভারতীয় মিডিয়ায় ‘গুজবের বন্যা’ বইছে। এসব গুজবে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের অন্তত দুটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, দুইজন পাকিস্তানি পাইলট আটক হয়েছেন, লাহোরে হামলা হয়েছে, করাচি বন্দরে ভারতীয় নৌবাহিনী আক্রমণ চালিয়েছে। তবে এসব তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানিয়েছেন ওই সামরিক কর্মকর্তা।
এছাড়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারত দাবি করে, জম্মু ও কাশ্মিরের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তবে পাক সামরিক সূত্র বলেছে, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপারে কোনো পাল্টা হামলা চালাইনি। ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যা প্রচার করছে, হয়তো উত্তেজনা বৃদ্ধির অজুহাত তৈরির চেষ্টা চলছে বা কৃত্রিম সাফল্য দেখানো হচ্ছে।’
একাধিক ভুয়া ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়া নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভারতীয় মিডিয়ায় একটি পাইলটের ছবি পাকিস্তানি পাইলট হিসেবে প্রচার করা হলেও, আসলে সেটি ছিল ২০১৬ সালে তোলা তুরস্কের এক দুর্ঘটনাস্থলের ছবি, যেখানে তুর্কি সেনারা একটি বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমানের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
একইভাবে, করাচি বন্দর হিসেবে যে ছবি প্রচার করা হয়েছে, সেটি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় একটি বিমান দুর্ঘটনার ছবি। এছাড়া ২০২৩ সালে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের একটি বিমান ঘাঁটির ভিডিওকেও পাকিস্তানে ভারতের হামলা বলে চালানো হয়েছে।