রাজউক থেকে ৩০ কাঠা প্লট গ্রহণে দুর্নীতির পৃথক তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা, তাদের সন্তান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিকসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি পুলিশ।
রোববার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত দিন ছিল। তবে পুলিশ প্রতিবেদন না দেওয়ায় আদালত আগামী ১২ মে নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আসামিরা পলাতক থাকায় গত ১৩ এপ্রিল আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়েছিল।
তিন মামলার মধ্যে একটিতে শেখ রেহানাকে, অন্যটিতে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে এবং আরেকটিতে আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করা হয়। সহযোগী আসামি করা হয় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাকে।
এছাড়া ১০ এপ্রিল, রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় শেখ হাসিনা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে ১৫ এপ্রিল আরও দুটি মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
১০ কাঠা প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন শেখ রেহানার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ আদালতে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এই মামলার আসামিরা হলেন— শেখ রেহানা, শেখ হাসিনা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, পুরবী গোলদার, অলিউল্লাহ, কাজী ওয়াছি উদ্দিন, মো. আনিছুর রহমান মিঞা, মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, মো. নুরুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম, নায়েব আলী শরীফ, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ।
অন্যদিকে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে পূর্বাচল প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে একই তারিখে আরেকটি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। এতে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
এই মামলার আসামিরা হলেন— আজমিনা সিদ্দিক, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, শেখ হাসিনা, মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, পুরবী গোলদার, অলিউল্লাহ, কাজী ওয়াছি উদ্দিন, মো. আনিছুর রহমান মিঞা, মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, মো. নুরুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, নায়েব আলী শরীফ, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ।
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একই দিনে আরেকটি মামলা করে দুদক। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ১৮ জনের বিরুদ্ধে।
এই মামলার আসামিরা হলেন— রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, শেখ হাসিনা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, পুরবী গোলদার, অলিউল্লাহ, কাজী ওয়াছি উদ্দিন, শহিদ উল্লা খন্দকার, মো. আনিছুর রহমান মিঞা, মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, ফারিয়া সুলতানা, মাজহারুল ইসলাম, নায়েব আলী শরীফ, শেখ শহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং শরীফ আহমেদ।
মামলাগুলো দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দায়ের করা হয়।