সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহ ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় জেল গেটে একদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দীনের আদালত তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানিয়েছেন, উভয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা আসামি চিন্ময় কৃষ্ণকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেক মামলায় একদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
এর আগে গত ৬ মে আদালত ২৬ নভেম্বরের ঘটনায় পুলিশের করা তিনটি মামলা এবং আইনজীবী আলিফের ভাইয়ের করা একটি মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেয়।
এরও আগে ৫ মে আদালত, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে, চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন।
আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে তাকে কারাগারে পাঠায়। ওই সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর চালায়।
পরে সাধারণ আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।
ওই দিনের সহিংসতার ঘটনায় রাতেই পুলিশ আদালত প্রাঙ্গণ, রঙ্গম সিনেমা হল ও কোতোয়ালি মোড়ে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে তিনটি মামলা করে।
আদালত প্রাঙ্গণের মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০০-৭০০ জনকে, রঙ্গম সিনেমা হলের ঘটনায় ১৪ জনের নামসহ অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে এবং কোতোয়ালি মোড়ের ঘটনায় ১৩ জনের নামসহ অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলাগুলোতে চিন্ময়কে ছিনিয়ে নিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অস্ত্রসহ হামলা, মারধর, জখম, ভাঙচুর, লুটপাট, ককটেল বিস্ফোরণ এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় ২৯ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় তার বাবা জামাল উদ্দিন একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়।
ওই দিন আলিফের ভাই খানে আলম আইনজীবীদের ওপর হামলা, বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন, যেখানে ১১৬ জনকে আসামি করা হয়।
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। ওই মামলায় হাই কোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করলেও রাষ্ট্রপক্ষ জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করায় তার মুক্তি আটকে যায়।