সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ার পর সেটিকে ‘ভুয়া’ ও ‘স্বার্থান্বেষী মহলের অপচেষ্টা’ হিসেবে উল্লেখ করে সতর্ক করেছে সেনাসদর।
বৃহস্পতিবার সারাদিন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন চলার পর সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে ‘ভাবনায় আছেন’ বলে জানান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
এ পরিস্থিতিতে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সৈনিক ও জুনিয়র অফিসারদের বরাত দিয়ে ছড়িয়ে পড়া একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিকে গুজব হিসেবে অভিহিত করেছে সেনাসদর এবং জনগণকে সচেতন থাকতে আহ্বান জানিয়েছে।
শুক্রবার সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, “সম্প্রতি, একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরীর অপচেষ্টা চলছে।”
পোস্টে আরও বলা হয়, “গুজবে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না।”
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক দফা দাবিতে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয় এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। সেদিনই শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান।
এরপর আন্দোলনের নেতাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। ৮ আগস্ট তিনি সরকার গঠন করেন।
সাড়ে নয় মাস পর নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণকে ঘিরে উভয় পক্ষের উপদেষ্টাদের মধ্যে পদত্যাগ দাবি নিয়ে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি হয়।
এই প্রেক্ষাপটে সেনানিবাসে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে কথা বলেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যান। তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির দায়িত্ব নেন।
বৈঠক শেষে বিবিসিকে নাহিদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন। চলমান পরিস্থিতিতে তিনি কাজ করতে পারছেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
নাহিদ বলেন, “স্যার বলছেন, আমি যদি কাজ করতে না পারি… যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণ অভ্যুত্থানের পর। দেশের পরিবর্তন, সংস্কার…। কিন্তু যেই পরিস্থিতি, যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।”