বিজিএমইএর নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সাত মাসেরও বেশি সময় পর, পূর্ববর্তী পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পর।
২০২৫-২৭ মেয়াদের জন্য শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাজধানী ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেল এবং চট্টগ্রামের র্যাডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
নির্বাচনে ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে অংশ নিচ্ছেন তিনটি প্যানেলের মোট ৭৬ জন প্রার্থী। ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ প্যানেল সবগুলো পদেই প্রার্থী দিয়েছে, তবে ঐক্যজোট পরিষদ প্যানেল ছয়টি পদে প্রার্থী দিয়েছে।
সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্বে রয়েছেন আবুল কালাম; তাদের ইশতেহারে রয়েছে ১২ দফা প্রতিশ্রুতি। ফোরাম প্যানেলের নেতা মাহমুদ হাসান খান ১৪ দফা ইশতেহার দিয়েছেন। অন্যদিকে, মোহাম্মদ মহসিনের নেতৃত্বে থাকা ঐক্য পরিষদ দিয়েছে ১৬ দফা।
ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলোতে কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঢাকার র্যাডিসন হোটেলের ভেতরে-বাইরে মোতায়েন রয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। কেন্দ্রে মোবাইল ফোন জমা দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে ভোটারদের। প্রার্থীদের সমর্থকদের ভোট শুরুর পর হোটেল চত্বর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং হোটেল গেটের বাইরে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তারা প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে প্রশাসক আনোয়ার হোসেন ও নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল প্রার্থীদের সমর্থকদেরও হোটেল এলাকা থেকে সরিয়ে দেন। পুলিশ সদস্য দেলোয়ার হোসেন হ্যান্ডমাইকে সবাইকে নিরাপত্তার স্বার্থে রেলস্টেশনের কাছাকাছি গাছতলায় অবস্থানের আহ্বান জানান।
ভোট শৃঙ্খলার মধ্যেই চলছে বলে জানান নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল। তিনি বলেন, “ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করছি।”
বিজিএমইএর প্রশাসক ও ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ চলছে এবং সরাসরি ফলাফল প্রচার করা হচ্ছে ওয়েবসাইট ও ইউটিউবে। হোটেলে স্থাপিত মিডিয়া কর্নারের বড় পর্দায় প্রতি মুহূর্তে ভোটসংখ্যা প্রদর্শিত হচ্ছে। সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ ভোটারের মধ্যে ৭২টি ভোট পড়েছে।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর বিজিএমইএর পর্ষদ বাতিলের দাবি ওঠে। ২০ অক্টোবর তা ভেঙে দিয়ে আনোয়ার হোসেনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা থাকলেও ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও শ্রম অসন্তোষের কারণে তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে নির্ধারিত সময় পার হয়ে চার মাস পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবার শুধু সচল কারখানার উদ্যোক্তাদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়েছে, ফলে ভোটার সংখ্যা কমে এসেছে। আগের নির্বাচনে ২ হাজার ৪৯৬ ভোটার থাকলেও এবার ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৫; ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ ও চট্টগ্রামে ৩০৩ জন।
প্রার্থী তালিকা
সম্মিলিত পরিষদ (ঢাকা):
আবুল কালাম, ফারুক হাসান, খন্দকার রফিকুল ইসলাম, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, আসিফ আশরাফ, মশিউল আজম সজল, মোস্তাজিরুল শোভন ইসলাম, আশিকুর রহমান, ফিরোজ আলম, মো. নুরুল ইসলাম, সৈয়দ সাদিক আহমেদ, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, মো. শাহদাৎ হোসেন, মহিউদ্দিন রুবেল, রেজাউল আলম মিরু, আবরার হোসেন সায়েম, মোহাম্মেদ কামাল উদ্দীন, সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী সাগর, তামান্না ফারুক থিমা, মির্জা ফায়েজ হোসেন, হেলাল উদ্দিন আহমেদ, লিথি মুনতাহা মহিউদ্দিন, এ কে এম আজিমুল হাই, মাঞ্জুরুল ফয়সাল হক, এস এম মনিরুজ্জামান, মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান।
সম্মিলিত পরিষদ (চট্টগ্রাম):
এস এম আবু তৈয়ব, রাকিবুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন কুমার দাশ, নাফিদ নবি, সৈয়দ মোহাম্মেদ তানভীর, মোস্তফা সারোয়ার রিয়াদ, মো. আবসার হোসেন, গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।
ফোরাম (ঢাকা):
মাহমুদ হাসান খান, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, কাজী মিজানুর রহমান, শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, ইনামুল হক খান, হাসিব উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, ভিদিয়া অমৃত খান, মোহাম্মদ আব্দুল রহিম, শাহ রাঈদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম, এ বি এম শামছুদ্দিন, নাফিস উদ দৌলা, সুমাইয়া ইসলাম রোজালিন, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মজুমদার আরিফুর রহমান, মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া, ফাহিমা আক্তার, আসেফ কামাল পাশা, রশীদ আহমেদ হোসাইনী, রুমানা রশীদ, সামিহা আজিম, রেজোয়ান সেলিম, ফয়সাল সামাদ।
ফোরাম (চট্টগ্রাম):
সেলিম রহমান, মোহাম্মদ সাইফ উল্যাহ মানসুর, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী, এমডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাকিফ আহমেদ সালাম, এনামুল আজিজ চৌধুরী, মো. এমদাদুল হক চৌধুরী, মির্জা আকবর আলী চৌধুরী, রিয়াজ ওয়াইজ।
ঐক্যজোট পরিষদ:
মোহাম্মদ মহসিন, দেলোয়ার হোসাইন, খালেদ এমডি ফয়সাল ইকবাল, এ কে এম আবু রায়হান, এমডি মহসিন অপু, শেখ এরশাদ উদ্দিন।