মে মাসে দেশে ২৯৭ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠালেন প্রবাসীরা

দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের জানান, আগের অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসের তুলনায় এবার রেমিটেন্স বেড়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে দেশে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসে। এরপর এপ্রিলে আসে প্রায় ২৭৫ কোটি ডলার। মে মাসের ২৯৭ কোটি ডলার এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল ২৬৪ কোটি ডলার।

আরিফ হোসেন খান বলেন, “চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ২ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। সে হিসেবে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ।”

বেসরকারি ব্যাংকের এক ট্রেজারি প্রধান বলেন, “রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ার অন্যতম কারণ ডলারের দরে স্থিতিশীলতা এসেছে এবং হুন্ডি ব্যবসা কমে গেছে। ফলে খোলা বাজার ও ব্যাংকের ডলারের দামের পার্থক্য এখন খুব একটা বেশি নয়।”

চলতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে দেয়।

১৪ মে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, “ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে দেওয়ার সময় হয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। বাজারভিত্তিক করা হলেও বর্তমানে ডলারের যে দর রয়েছে, তার থেকে খুব বেশি তারতম্য ঘটবে না।” তিনি আরও বলেন, “গত কয়েক মাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, ডলার বাজার স্থিতিশীল ছিল। আগামীতেও আশা করছি ডলার বাজারে হস্তক্ষেপ করার দরকার হবে না।”

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ আগামী জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ হাতে পাবে বলে আশা করছে সরকার। আটকে থাকা কিস্তির অর্থ ছাড়ে নানা শর্ত নিয়ে আলোচনা শেষে সম্প্রতি আইএমএফের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েছে বাংলাদেশ। এজন্য মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে কিছুটা ছাড় দিতে সম্মত হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বেসরকারি ব্যাংকের একজন ট্রেজারি প্রধান বলেন, বাজারভিত্তিক করার পরও ডলারের দর খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি, যা ডলার বাজারের জন্য ইতিবাচক।

তবে মে মাসেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব আসে, যা বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা।

মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্য দেশে অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে কর বসাতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যে আইন প্রস্তাব করেছেন, তা পাস হলে রেমিটেন্স প্রবাহে প্রভাব পড়তে পারে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স; ৩৯৪ কোটি ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১২ কোটি ডলার এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।

ডনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ নামের নতুন আইনের পক্ষে রোববার ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ বাজেট কমিটি। আগামী সপ্তাহে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে বিলটির ওপর ভোট হতে পারে।

যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন, অথচ কাজ বা ব্যবসা সূত্রে সেখানে থাকেন, তাদের ওপর এই কর প্রযোজ্য হবে। এইচ-১বি ভিসা, এফ-১ ভিসাধারী, এমনকি গ্রিনকার্ডধারীরাও এর আওতায় পড়বেন।

করের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় সীমা নেই। অর্থাৎ যে কোনো অঙ্কের অর্থ পাঠালেই কর দিতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *