আগামী অর্থবছরের প্রস্তাব অনুযায়ী, ৫, ১০, ১৫, ২০ ও ২৫ শতাংশ করহারের পরে উচ্চস্তরে আরেকটি করহার যুক্ত হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, বছরে আয় সাড়ে ৩৮ লাখ টাকার বেশি হলে ওই করদাতাকে অতিরিক্ত অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
নতুন প্রস্তাবনায়, প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার পরে প্রথম এক লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ, পরবর্তী ২০ লাখ টাকার জন্য ২৫ শতাংশ এবং অতিরিক্ত অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর বসবে।
নারী করদাতা ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ টাকা। তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা ও প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়সীমা হবে পৌনে পাঁচ লাখ টাকা। গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা হবে পাঁচ লাখ টাকা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা-মাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা বেশি হবে।
গেজেটভুক্ত জুলাই গণ–অভ্যুত্থান ২০২৪–এর আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ করদাতাদের জন্য ২০২৬–২৭ অর্থবছর থেকে করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি। সাধারণ করদাতাদের জন্য অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আগের মতোই বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা অপরিবর্তিত রেখেছেন।
তবে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ শতাংশ হারে একটি কর স্তর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া স্তরেও পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
২০২৬–২৭ অর্থবছর থেকে পরবর্তী এক অর্থবছরের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। পাশাপাশি কর স্তরের পুনর্বিন্যাস করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর ১ হাজার টাকা
নতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর এক হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। করমুক্ত আয়সীমা পার হলেই এক হাজার টাকা কর দিলেই হবে। বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার টাকা, অন্য সিটি করপোরেশন এলাকায় চার হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্য এলাকার করদাতাদের জন্য ন্যূনতম তিন হাজার টাকা।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ১ কোটি ১১ লাখের মতো কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএনধারী) আছেন। চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪০ লাখ করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে। এর মানে হলো, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচ গত এক বছরে ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। কিন্তু মজুরির হার ৮ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে থাকায় তাঁদের প্রকৃত ক্রয়ক্ষমতা কমেছে।