ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় বিএনপি, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ক্ষোভ

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছে বিএনপি। শুক্রবার রাতে দলটির স্থায়ী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভা শেষে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় অবস্থানের কথা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় প্রধান উপদেষ্টার ওই ভাষণ নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বলা হয়, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে একদিকে আবহাওয়ার সংকট এবং অন্যদিকে রমজানের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা ও কার্যক্রম এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, যা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়—এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণও উল্লেখ করা হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপুল আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জিত হলেও, নির্বাচন অনুষ্ঠানে অহেতুক বিলম্বে জনগণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে। সভা মনে করে, রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানই যৌক্তিক।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কথা বললেও, একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করা হচ্ছে। এতে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে জনগণের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।

সভায় সর্বসম্মতভাবে অভিমত প্রকাশ করা হয় যে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ প্রসঙ্গ অতিক্রম করে ‘জাতির উদ্দেশে’ পরিণত হয়েছে। ভাষণে তিনি বন্দর, করিডর ইত্যাদি এমন কিছু বিষয়ে অবতারণা করেছেন, যা তাঁর নিজের কথায় অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি ‘ম্যান্ডেটের’ মধ্যেও পড়ে না। সভায় ভাষণের শব্দচয়ন নিয়ে রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম করায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।