চমেক শিক্ষার্থী আবিদ হত্যা: খালাস পাওয়া ১২ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ হাইকোর্টের

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদকে ১৪ বছর আগে পিটিয়ে হত্যার মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া ১২ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বাদীর আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে। নিহত আবিদুর রহমান চমেকের ৫১তম ব্যাচের বিডিএস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উত্তর বড়ইতলী গ্রামে। আসামিরা ছিলেন তৎকালীন চমেক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর দুপুর আড়াইটা, সন্ধ্যা ৭টা ও রাত ১০টায় তিন দফা মারধরের পর চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে আবিদকে বোনের বাসায় পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসা করাতে বাধা দেন আসামিরা। ২০ অক্টোবর তাঁকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর নিহতের মামা নেয়ামত উল্লাহ ২৩ অক্টোবর চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ মডেল থানায় ২২ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় এবং ১০ জনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়।

বিচার শেষে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী রায়ে আসামিদের খালাস দেন।

খালাস পাওয়া ১২ জন হলেন—তৎকালীন ছাত্রসংসদের সহসভাপতি মফিজুর রহমান জুম্মা, চমেক ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহসাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান, ধীমান নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোস্তফা কামাল, রাশেদুর রেজা সানি ও সালমান মাহমুদ সিদ্দিকী ওরফে রাফসান।

রায়ের বিরুদ্ধে বাদী চলতি মাসে ২ হাজার ৪৭ দিন বিলম্ব মার্জনার আবেদনসহ হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন। শুনানিতে তাঁর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. ওজিউল্লাহ, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, আজিমুদ্দিন পাটোয়ারী ও ইয়াছিন আলফাজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. এরশাদুল বারি খন্দকার।

আদালত ১২ জনকে ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে রুল জারি করে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করা হবে না।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. এরশাদুল বারি খন্দকার জানান, হাইকোর্ট খালাসের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন এবং আসামিদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *