বাংলাদেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে গড়ে সাড়ে তিনশ মানুষের মৃত্যু ঘটে বলে জানিয়েছেন একজন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ। তার ভাষ্যমতে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩.৩৬ মিলিয়ন বজ্রপাত হয়, যার ফলে বহু মানুষ প্রাণ হারান। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সিলেট। সাধারণত এপ্রিল ও মে মাসে বজ্রপাতের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, দেশে বজ্রপাতের হার ১০ শতাংশ বেড়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে।
আন্তর্জাতিক বজ্রপাত নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন সচিব জানান, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিকে (সিপিপি) একটি পূর্ণাঙ্গ অধিদপ্তরে রূপান্তরের উদ্যোগ চলছে। এই অধিদপ্তর শুধু ঘূর্ণিঝড় নয়, বরং সব ধরনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কাজ করবে। এতে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের যুক্ত করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে।
সেমিনারে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকার জন্য কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়:
- আকাশে কালো মেঘ দেখা গেলে বা বজ্রপাতের শব্দ শোনা গেলে ঘরের ভেতরে অবস্থান নিতে হবে।
- বাইরে কাজ করার সময় আশ্রয় না পেলে নিচু হয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসতে হবে, তবে মাটিতে শুয়ে পড়া যাবে না।
- জলাশয়ে থাকলে নৌকার ছইয়ের নিচে থাকতে হবে; ছই না থাকলে যতটা সম্ভব কম স্পর্শ রেখে পাটাতনে বসতে হবে।
- মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হবে এবং জলাশয় থেকে দূরে থাকতে হবে।
- গাছের নিচে বা উঁচু স্থানে অবস্থান করা যাবে না।
- ছেঁড়া বিদ্যুতের তার থেকে দূরে থাকতে হবে।
যেসব স্থান নিরাপদ নয়:
- উন্মুক্ত স্থানে টানানো তাঁবু
- চারদিক খোলা চালাযুক্ত জায়গা
- খোলা ও ধাতব যাত্রী ছাউনি
- ছাতা ব্যবহার করাও ঝুঁকিপূর্ণ
বজ্রপাতের একাধিক শব্দ শোনা গেলে, সর্বশেষ শব্দটির পর কমপক্ষে ৩০ মিনিট ঘরের ভেতর থাকতে বলা হয়েছে সেমিনারে।