রাষ্ট্র সংস্কারে ৫৩ বছরে এমন আলোচনার সুযোগ আসেনি: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে দেশের ইতিহাসে গত ৫৩ বছরে কখনো এমন আলোচনার সুযোগ আসেনি। অনেক আত্মদান ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এবার যে সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হয়েছে, তা হেলায় হারানো যাবে না।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের নবম দিনে সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, “শুধু এখানে নয়, আমরা জানি—আপনারা দলগত, জোটগতভাবে পরস্পরের মধ্যে আলাপ করছেন, যেটা আমাদের অনুপ্রাণিত করছে। কারণ সবকিছু এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে না। তাই আমরা বলেছি, সমমনা দল বা জোটের সঙ্গে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসুন।”

তিনি বলেন, “সংস্কার নিয়ে ৫৩ বছরে এমন আলোচনা হয়নি। এবার আমরা অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি অতিক্রম করে এখানে এসেছি। এটা একটি ইতিবাচক দিক—কারণ এভাবে পরস্পরকে জানার সুযোগও তৈরি হচ্ছে।”

প্রথম ধাপের সংলাপে কিছু মৌলিক বিষয়ে মতানৈক্য থাকলেও, দ্বিতীয় ধাপে কমিশন প্রায় ২০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রাথমিক অবস্থান বুঝে দলগুলোর সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করছে বলেও জানান রীয়াজ।

তিনি বলেন, “কখনো কখনো মনে হতে পারে—একই বিষয়ের আলোচনা কেন বারবার হচ্ছে। কিন্তু এতে দলগুলোর অভ্যন্তরে আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়। পরে সেই যুক্তিগুলো নিয়ে আমরা সিদ্ধান্তের দিকে অগ্রসর হতে পারি।”

এদিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণার মতো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, “আজ আমরা অন্তত একটি বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাই। এটাই হবে দিনের ইতিবাচক অর্জন।”

আলী রীয়াজ বলেন, “যারা জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছেন, তাদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রতিনিয়ত স্মরণ করতে হবে। রাষ্ট্রকাঠামো বদলে একটি জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা গড়ার এই সুযোগ যেন নষ্ট না হয়, এটা আমাদের গাইডিং প্রিন্সিপাল হওয়া উচিত।”