যুবদল কর্মী আরিফ হত্যা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ৭ দিনের রিমান্ডে

যুবদল কর্মী আরিফ সিকদারকে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

ঢাকার মহানগর হাকিম আবদুল ওয়াহাব বুধবার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম গত ২৫ জুন সুব্রত বাইনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানির জন্য বুধবার সুব্রত বাইনকে আদালতে হাজির করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন সুব্রত বাইন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

সুব্রত বাইনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন। তিনি বলেন, “মামলার এজাহারে আসামি ১০ জন। তিনজনের বয়স ৪০ ও তার বেশি, বাকিদের বয়স ১৯ বছর। এক ও দুই নম্বর আসামির ভূমিকা এজাহারে আছে। কিন্তু এই মামলার সাথে তার (সুব্রত বাইন) কোনো সম্পর্ক নেই। কেন তাকে মামলায় যুক্ত করা হলো?”

তিনি আরও বলেন, “২০০১ সালের টপ টেরর লিস্টে ছিলেন। আমরা জানি এসব গল্প কোথায় শুরু হয় আর কোথায় শেষ হয়। কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে তাকে মামলায় আনা হয়েছে।”

এরপর বিচারক তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চান, কী কারণে তাঁর নাম মামলায় এসেছে। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “মিরাজের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ইফতি ও রনির নাম আসে। রনি ইফতির কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে তা ফেরত দেয়। এই আসামি তাদের সহযোগী।”

সুব্রত বাইনের আইনজীবী বলেন, “তিনি আড়াই বছর আয়নাঘরে ছিলেন এবং ৫ অগাস্টের পর বের হন। ২০২২ সালের মাঝামাঝি ভারত থেকে ফেরত আসেন। অন্য আসামিদের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি। প্রয়োজনে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।”

শুনানি শেষে আদালত সুব্রত বাইনকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বলে জানান প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই মোকছেদুল ইসলাম।

গত ২৭ মে সুব্রত বাইন ও তাঁর সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী। পরদিন হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র আইনের মামলায় তাঁর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

৫ জুন রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর আরিফ হত্যার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল রাতে হাতিরঝিল থানাধীন নয়াটোলা মোড়ল গলির ‘দি ঝিল ক্যাফে’র সামনে যুবদল কর্মী আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় আরিফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় আরিফের বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।