হ্যাটট্রিক সাগরিকা, শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ শুরু বাংলাদেশের

দ্বিতীয় মিনিটেই গোল। এরপর একের পর এক গোলের আনন্দে ডানা মেলল মেয়েরা। সাগরিকা উপহার দিলেন হ্যাটট্রিক। শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে সাফ উইমেন’স অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ সূচনা পেল বাংলাদেশ।

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শুক্রবার রাউন্ড রবিন লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৯-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। জোড়া গোল করেছেন মুনকি আক্তার। স্বাগতিকদের পক্ষে একবার করে আরও জালের দেখা পেয়েছেন স্বপ্না রানী, শিখা জাহান, রুপা আক্তার ও শান্তি মার্দি।

বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতার ২০২৩ সালের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ রোববার মুখোমুখি হবে নেপালের।

গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে মাঠ কর্দমাক্ত ও ভারী হয়ে গেলেও, বাংলাদেশকে গোলের জন্য ভুগতে হয়নি। গোল উৎসবের শুরু করেন স্বপ্না রানী। তার দৃষ্টিনন্দন ফ্রি কিকে বল বাতাসে ভেসে লাফিয়ে ওঠা গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায়। তিন মিনিট পর এক ছুটে বাম দিকে দিয়ে বক্সে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মুনকি আক্তার।

২০তম মিনিটে মুনকির শট গোলরক্ষক ফেরানোর পর শিখা জাহানের ফিরতি শট পোস্টে লেগে ফেরে। একটু পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বক্সে ঢুকতে পারে শ্রীলঙ্কা, যদিও তেমন কিছুই করতে পারেনি তারা।

শ্রীলঙ্কার রক্ষণে চাপ ধরে রেখে একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকেন সাগরিকা, পুজারা; কিন্তু কখনও লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে, কখনও গোলকিপারের দৃঢ়তায় ব্যবধান বাড়াতে পারছিলেন না কেউ।

৩৭তম মিনিটে গোলের খাতা খোলেন সাগরিকা। শিখার দারুণ ক্রস গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে খুঁজে নেয় তাকে। গোলমুখ থেকে অনায়াসে লক্ষভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড।

একটু পর স্বপ্নার রক্ষণ চেরা পাস ধরে শিখা জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে হয়নি গোল। ৪১তম মিনিটে ছোট ফ্রি কিকের পর আফঈদা খন্দকারের শট গোলকিপার আঙুলের টোকায় বের করে দেন ক্রসবারের ওপর দিয়ে।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ছোট বক্সের ভেতর থেকে সাগরিকা গোলকিপারকে পরাস্ত করার পর ওঠে অফসাইডের পতাকা। সেসময় গোললাইনের ওপর শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় ও গোলকিপার ছিলেন, ফলে অফসাইডের সিদ্ধান্ত জন্ম দেয় বিস্ময়ের।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সাগরিকার কাটব্যাকে গোলমুখে অরক্ষিত মুনকি নিখুঁত ট্যাপে জাল খুঁজে নেন। এরপরই অধিনায়ক আফঈদাকে তুলে রুমা আক্তারকে নামান বাটলার।

৫০তম মিনিটে বাম দিক থেকে আসা ক্রস দারুণ প্লেসিং শটে জালে জড়ান শিখা। বড় জয়ের পথে ছুটতে থাকে বাংলাদেশ।

৫৩তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে বক্সে ঢুকে নিচু শটে ব্যবধান বাড়ান সাগরিকা। পাঁচ মিনিট পর পুজার কাটব্যাকে প্লেসিং শটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এই ফরোয়ার্ড। একটু পরই সাগরিকাকে তুলে তৃষ্ণা রানীকে নামান কোচ।

শেষ দিকে নতুনদের পরখ করে নেওয়ায় মনোযোগী হন বাটলার। ৭২তম মিনিটে বন্যার শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসার একটু পরই মুনকির বদলি নামান কানন রানীকে। ৮৫তম মিনিটে বক্সের জটলার ভেতর থেকে স্কোরলাইনে নাম লেখান রুপা।

যোগ করা সময়ে পাল্টা আক্রমণ থেকে জাসোথারান লায়নসিকা শ্রীলঙ্কার পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন। শেষের বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে বাংলাদেশের হয়ে নবম গোলটি করেন শান্তি।