সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের গ্রেপ্তারকে স্বাগত জানিয়ে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বিলম্বে হলেও তার বিরুদ্ধে সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করি, সব বিষয়ের সঠিক তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।”
তিনি বলেন, “আইন অনুযায়ী যেসব বিধান রয়েছে, তা অনুসরণ করে প্রসিকিউশন নিশ্চিত করতে হবে। তবে তাকে এমন শাস্তি দিতে হবে যেন ভবিষ্যতে কেউ বিচারকাজকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ক্ষতি করতে না পারে।”
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অন্তত দুটি মামলা রয়েছে। তিনি ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ছিলেন। তার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেয়, যা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অবৈধ ঘোষণা করে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশের একজন বড় শত্রু, যিনি রাষ্ট্রের বড় ক্ষতি করেছেন, তাকে আল্লাহর বিচার অনুযায়ী আজ ধরা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শর্ট ও পূর্ণাঙ্গ রায়ে আকাশ-পাতাল তফাৎ ছিল। ওই রায় রাষ্ট্রবিরোধী ছিল।”
সাবেক প্রধান বিচারপতিকে রাজনৈতিক সংকট তৈরির জন্য ‘একশ ভাগ দায়ী’ বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পর থেকেই দেশে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়, যা জাতির ক্ষতি করেছে।”
বিচার বিভাগের ওপর জনগণের আস্থা ধ্বংসের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “একটি রাজনৈতিক চিন্তার ভিত্তিতে খায়রুল হক জনগণের আস্থার জায়গাকে ধ্বংস করেছেন।”
আরও যেসব ব্যক্তি এই কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় অন্য এক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, শিশু একাডেমির ভবনটি ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করি।”
তিনি বলেন, “শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এটি দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ভবনটি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া জাতি গঠনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।”
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপি মহাসচিব মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তিন শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি উত্তরার দিয়াবাড়ির তারারটেকের একটি পারিবারিক কবরস্থানে গিয়ে তিন শিক্ষার্থীর কবর জিয়ারত করেন। এছাড়া শহীদ জুনায়েদ ও শারিয়ার কবরও জিয়ারত করেন।
নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়ে ফখরুল বলেন, “এটি জাতীয় ট্র্যাজেডি।”
এ সময় মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর, কফিল উদ্দিন, আফাজ উদ্দিন ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।