চার মাস পর দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

চার মাস লন্ডনে চিকিৎসা শেষে আগামী ৫ মে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি জানান, “ইনশা আল্লাহ, ম্যাডাম আগামী ৫ তারিখ সকালে দেশে ফিরছেন। আমরা যতদূর জানি, সাথে উনার দুই বউমা—তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমানের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান—আসার কথা রয়েছে।”

২০০৭ সালে স্বামী তারেক রহমান ও মেয়ে জাইমাকে নিয়ে লন্ডনে যান জোবাইদা রহমান এবং আর দেশে ফেরেননি। অন্যদিকে সৈয়দা শামিলা রহমান এর আগে কয়েকবার দেশে এসেছেন, সর্বশেষ মায়ের অসুস্থতায় এসেছিলেন এবং ২৯ এপ্রিল লন্ডনে ফিরে যান।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। লন্ডনে পৌঁছে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন তিনি এবং টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন প্যাট্রিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে। এরপর থেকে তিনি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

অর্ধযুগেরও বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন খালেদা জিয়া।

তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ আগের চাইতে উনি ডেফিনেটলি ভালো।”

দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কাতারের আমিরের কাছ থেকে যে অ্যাম্বুলেন্সটা উনাকে লন্ডনে নেয়ার জন্য পেয়েছিলাম, সেটা এখন একটু বিলম্বিত হচ্ছে… টেকনিক্যাল রিজিয়নস। সেজন্য ম্যাডাম ঠিক করেছেন, ওইটা যদি শেষ মুহূর্তে না পাওয়া যায় উনি বাংলাদেশ বিমানেই আসবেন। বাংলাদেশ বিমানে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪ তারিখ রওনা হলে ইনশা আল্লাহ ৫ তারিখ সকাল ১১টার দিকে এসে পৌঁছাবেন।”

গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী ম্যাডাম খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন, এ সংক্রান্ত সব প্রস্তুতির কাজ আমরা করছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থায় সব কিছু জানানো হয়েছে।”

লন্ডন থেকে ফেরার বিষয়টি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি দেন। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দী হন খালেদা জিয়া। এরপর তার চারটি ঈদ কেটেছে কারাগারে ও হাসপাতালে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের আদেশে তিনি মুক্তি পান এবং আদালত তার বিরুদ্ধে থাকা দুটি মামলার রায় বাতিল করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *