খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পেয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হযরত আলী।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, পূর্ণকালীন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তিনি রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। এ সময়ে তিনি বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতা ও বিধি অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এস কে শরিফুল আলমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ছয় দিন পর উপাচার্যের দায়িত্বে নতুন মুখ নিয়োগ পেলেন।
ছাত্রজনতার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর গত সেপ্টেম্বরে কুয়েটের উপাচার্যের দায়িত্ব পান অধ্যাপক মাছুদ এবং ডিসেম্বরে উপ-উপাচার্য হন শরিফুল আলম। ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের জেরে ৩৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কারের ঘটনায় উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে সংঘর্ষ হয়। পরদিন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই দিন সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সংঘর্ষ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। একই রাতে প্রশাসন অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে।
২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনশনে বসেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার পরিস্থিতি শান্ত করতে ক্যাম্পাসে গেলেও অনশন ভাঙাতে ব্যর্থ হন।
২৩ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের শাস্তি প্রত্যাহার ও হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ৪ মে থেকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালুর কথাও জানানো হয়। তবে উপাচার্যের অপসারণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনশনে অনড় থাকেন।
একই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠিত কমিটির তিন সদস্য ক্যাম্পাসে যান। সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির বার্তা পড়ে শোনালে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন এবং হলে ফিরে যান।