অনুমতি ছাড়া হজ পালন না করার জন্য দেশের ও সৌদিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনা, হজযাত্রীদের কল্যাণ এবং বাংলাদেশ-সৌদি আরবের মধ্যকার বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বিবেচনায় রেখে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চলতি হজ মৌসুমে ভিজিট ভিসায় মক্কা কিংবা পবিত্র স্থানগুলোতে অবস্থান না করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হজ বিধিমালা অমান্যকারী ভিজিট ভিসাধারীকে পৃষ্ঠপোষকতা, পরিবহন, সংরক্ষিত হজ এলাকায় প্রবেশে সহায়তা এবং হোটেল বা বাড়িতে আবাসনের ব্যবস্থা করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সৌদি সরকার এ বছর হজযাত্রীদের মক্কায় প্রবেশ সহজ করা, অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন বিধিমালা জারি করেছে। এ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বৈধ অনুমতিপত্র, মক্কায় নিবন্ধিত বসবাসের প্রমাণপত্র (ইকামা) ও সরকারিভাবে ইস্যু করা হজ পারমিট ছাড়া কেউ মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজ পারমিট ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা করলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা গুনতে হবে। এ কাজে সহায়তা করলে জরিমানা হবে এক লাখ রিয়াল পর্যন্ত। এছাড়া অপরাধ প্রমাণিত হলে সহায়তাকারীর যানবাহন আদালতের রায়ে বাজেয়াপ্ত করা হবে।
যদি কোনো বিদেশি নাগরিক নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত অবস্থান করেন বা অনুমতি ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা করেন, তাহলে তাকে সৌদি আরব থেকে বহিষ্কার করা হবে এবং পরবর্তী ১০ বছর দেশটিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। জিলকদ মাসের ১ তারিখ (২৯ এপ্রিল) থেকে জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ (১০ জুন) পর্যন্ত এ বিধান কার্যকর থাকবে।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সৌদি সরকারের ঘোষিত আইন-কানুন অনুসরণ করা আবশ্যক। প্রায় ৩৫ লাখ বাংলাদেশি সৌদি আরবে কর্মরত এবং বাংলাদেশ এখান থেকে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পায়। এ সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে সরকার সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক বলেন, হজ একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা এবং এটি টিম ওয়ার্কের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। হজ পরিচালনায় সৌদি আরব মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। সুপরিকল্পিত কর্মসূচি, আইন-কানুনের যথাযথ প্রয়োগ এবং অংশীজনের সহযোগিতা ছাড়া সুশৃঙ্খল হজ আয়োজন সম্ভব নয়।
তিনি হজের পবিত্রতা রক্ষা ও হজযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে টিম স্পিরিট নিয়ে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশি নাগরিকরা এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে এবং ২০২৫ সালে বাংলাদেশ একটি সফল হজ আয়োজন করতে পারবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।