মালয়েশিয়া যেতে না পেরে ঢাকায় শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

সব প্রক্রিয়া শেষ করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে না পারায় কয়েকশ কর্মী ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেছেন।

রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা মালয়েশিয়া যাওয়া নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ওই মোড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

অবরোধ চলাকালে শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধিদল প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে সকাল পৌনে ১১টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নেন। তবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সার্ক ফোয়ারা ও পান্থকুঞ্জ এলাকায় অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।

২০২৪ সালে নতুন ও পুরাতন বিদেশি কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৩১ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। বিমানের টিকেট স্বল্পতাসহ নানা কারণে সে সময়ের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি যেতে পারেননি।

পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়াকে ওই কর্মীদের গ্রহণের অনুরোধ জানায়। একই বছরের ৪ অক্টোবর ঢাকায় সংক্ষিপ্ত সফরে এসে সেই আহ্বানে সাড়া দেওয়ার ঘোষণা দেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও কাজে যোগ দিতে না পারায় শ্রমিকদের ক্ষোভ বাড়ছে। শরীয়তপুর থেকে আসা সাগর ফরাজী বলেন,
“আমরা নানা কারণে আটকে পড়েছিলাম, সেটায় আমাদের কোনো দোষ ছিল না। পরে সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল বোয়েসেলের মাধ্যমে নেওয়া হবে। কিন্তু বোয়েসেল নানা রকমের হয়রানি করছে। মালয়েশিয়া নেওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। আবার বলছে আমাদের কিছু লোক বাদ দেওয়া হবে। অথচ সবার পারমিট আছে, ভিসা আছে, সব প্রক্রিয়াই শেষ। এখন বাদ দেওয়া কেন? নিতে হলে সবাইকে নিতে হবে।”

আরেক বিক্ষোভকারী সাইফুল ইসলাম বলেন,
“আমরা মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করছি। কিন্তু সিন্ডিকেটের অপকর্মের কারণে আমরা সময়মতো যেতে পারিনি। আমাদের মূল দাবি—আমাদের মালয়েশিয়া নিতেই হবে। আমরা আজ সড়ক অবরোধ করেছি, মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে সড়ক ছেড়েছি। কিন্তু দাবি পূরণ না হলে আবারও অবরোধে নামব।”


আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো—

  • ২০২৪ সালের ৩১ মে’র আগে যাদের ই-ভিসা ইস্যু হয়েছে, কিন্তু বিএমইটির ছাড়পত্র পাননি এবং যারা সব প্রক্রিয়া শেষ করেছেন, তাদের দ্রুত মালয়েশিয়া পাঠাতে হবে।
  • নতুন সাক্ষাৎকার হোক বা না হোক, কোনো শ্রমিককে প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা যাবে না।
  • অতি দ্রুত একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে এবং লিখিতভাবে একটি স্মারকলিপি দিতে হবে।
  • প্রধান উপদেষ্টা ও প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই স্মারকলিপি জমা দিতে হবে।
  • নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের পাঠানো সম্ভব না হলে সরকারকে অবিলম্বে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।