সাকিব আল হাসানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেল সাজ্জাদ হোসেন

জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে করা অর্থ লোপাট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেনকে।

আগে সাকিবের ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্বে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলম। তাকে গত ৪ সেপ্টেম্বর কমিশন সাময়িক বরখাস্ত করে।

এ বিষয়ে সোমবার দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বলেন, “কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি কোনো মামলা বা অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান থাকে এবং পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ আসে, সেক্ষেত্রে তা পূর্বের অনুসন্ধানের সঙ্গে যুক্ত হওয়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।”

দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, সাকিব ও অন্যদের বিরুদ্ধে ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অভিযোগটি দুদকের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত–২ শাখা এবং ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়–১ এর মামলার (নম্বর ১৫) সঙ্গে সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের সফলতম ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাগুরা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অগাস্টে তিনি যখন কানাডায় ছিলেন, সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর তার আর দেশে ফেরা হয়নি।

অগাস্টেই সাকিবের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় হত্যা মামলা হয়। পরে ‘শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি, নিষিদ্ধ জুয়ার ব্যবসা ও জুয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, স্বর্ণ চোরাচালানে সম্পৃক্ততা, প্রতারণার মাধ্যমে কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের অর্থ আত্মসাৎ, ক্রিকেট খেলায় দুর্নীতি ও নির্বাচনী হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

গত ১৭ জুন শেয়ার বাজার থেকে ‘কারসাজির মাধ্যমে অর্থ লোপাটের অভিযোগে’ সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে করা মামলায় সাকিব ও অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২৫৭ কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’ করার অভিযোগ আনা হয়।

ক্রিকেট তারকা সাকিব এক সময় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসি এবং দুদকের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন। এখন পুঁজিবাজারের কেলেঙ্কারিতে সেই দুদকের মামলাতেই তাকে আসামি হতে হয়েছে।

এই মামলার বাকি ১৪ আসামি হলেন— সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।

শেয়ার ‘কারসাজির’ অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সাকিবকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। এরপর ৮ নভেম্বর সাকিবের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার কথা জানায় আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বিদেশে থাকা সাবেক এই এমপির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আসে গত ১৬ জুন।