কয়েকদিনের নাটকীয়তা ও নানা গুঞ্জন শেষে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ১৬ জন প্রার্থী। ফলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্বাচনে এখন মোট প্রার্থী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৬ জন।
ক্যাটেগরি-১: বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার পরিচালক
বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার ১০ পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছয়জন। এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম আব্দুর রাজ্জাক। ওয়ানডে ক্রিকেটে দেশের শীর্ষ উইকেট শিকারি এবং কদিন আগেও জাতীয় নির্বাচক ছিলেন এই সাবেক স্পিনার। তিনি জাতীয় নির্বাচক পদ ছেড়ে খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন।
রাজ্জাকের সঙ্গে খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার জুলফিকার আলী খানও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। খুলনায় এই দুজন ছাড়া আর কোনো প্রার্থী ছিল না।
চট্টগ্রাম থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক হয়েছেন আহসান ইকবাল চৌধুরী, কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। এছাড়াও সিলেট বিভাগে রাহাত শামস ও বরিশাল বিভাগে শাখাওয়াত হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
গুঞ্জন রয়েছে যে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত অধিকাংশ পরিচালক ক্রীড়া উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ।
ক্যাটেগরি-১ এর ভোট প্রতিযোগিতা হবে ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুরে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় লড়াইটি ঢাকায়। ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে লড়ছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধি ও বর্তমান ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন। তাদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর ও সাবেক পরিচালক এসএম আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান। এই তিনজনের মধ্যে থেকে দুইজন নির্বাচিত হবেন।
রাজশাহী থেকে লড়ছেন বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার হাসিবুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার মুখলেসুর রহমান ও জয়পুরহাট জেলা ক্রীড়া সংস্থার এসএম শামস মতিন। রংপুর থেকে লড়ছেন বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার মো: হাসানুজ্জামান, দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার রেহাতুল ইসলাম খোকা ও ঠাকুরগাঁও জেলা ক্রীড়া সংস্থার নুর-এ-শাহাদৎ স্বজন। রাজশাহী ও রংপুর থেকে একজন করে পরিচালক নির্বাচিত হবেন।
ক্যাটেগরি-২: ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট থেকে পরিচালক
ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট থেকে নির্বাচিত হবেন ১২ জন পরিচালক। মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন ৩০ জন, তবে ১৩ জন নাম প্রত্যাহার করেছেন। আরও একজন নির্বাচনের বাইরে আছেন, কারণ তিনি আলোচিত ১৫ ক্লাবের একটির কাউন্সিলর, যাদের বিরুদ্ধে আদালতে রিট আছে। বাকি ১৬ জনের মধ্যে ১২ জন নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচনী ময়দানে থাকা ১৬ জনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম ফারুক আহমেদ। চার মাস আগে বিসিবি সভাপতির পদ হারানো সাবেক এই অধিনায়ক আবার বোর্ডে ফেরার অপেক্ষায়।
অন্য প্রার্থীরা হলেন: মোহাম্মদ লুতফর রহমান (লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জ), ইসতিয়াক সাদেক (ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব), আদনান রহমান (দীপন) (রুপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব), ফায়াজুর রহমান (উত্তরা ক্রিকেট ক্লাব), আবুল বাশার (প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব), আমজাদ হোসেন (ঢাকা স্পারটান্স ক্রিকেট ক্লাব), শানিয়ান তানিম নাভিন (ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাব), একেএম আহসানুর রহমান মল্লিক রনি (ইয়াং পেগাসাস ক্লাব), মোখলেছুর রহমান ভুঞা (ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব), এম নাজমুল ইসলাম ফারুক আহমেদ (ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেট একাডেমি), মেজর (অব:) ইমরোজ আহমেদ (কাঠালবাগান গ্রীণ ক্রিসেন্ট ক্লাব), রাকীব উদ্দিন (এইস ওয়ারিয়র্স), মনজুর আলম (রেগুলার স্পোর্টিং ক্লাব), মেহরাব চৌধুরী (যাত্রাবাড়ি ক্রীড়া চক্র) ও মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান ভুঞা (ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব)।
ক্যাটেগরি-৩: সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্ববিদ্যালয় কোটায় পরিচালক
সাবেক ক্রিকেটার, বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য সংস্থার কোটায় নির্বাচিত হবেন একজন পরিচালক। লড়াইয়ে আছেন দুজন: সাবেক ক্রিকেটার কোটায় সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ (পাইলট) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলর, সাবেক ক্রিকেটার ও বিসিবির সাবেক ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পাল।
নির্বাচন প্রক্রিয়া ও সভাপতি নির্বাচন
বিসিবিতে মোট ২৫টি পরিচালকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে ২৩ জন নির্বাচিত হবেন তিনটি ক্যাটেগরি থেকে, বাকি দু’জন সরাসরি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে নির্বাচিত হবেন। পরবর্তীতে এই ২৫ পরিচালক ভোটে বিসিবি সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হবেন।
বিসিবি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে। দিনজুড়ে পরিচালকের নির্বাচন হবে, এবং সন্ধ্যায় সভাপতি নির্বাচন সম্পন্ন হবে।