বিসিবি নির্বাচনে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ আমিনুল হকের

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক।

গতকাল রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে নির্বাচনের মাধ্যমে চার বছরের জন্য ২৩ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে আরও দুজনকে। এরপর তাঁদের ভোটে নতুন সভাপতি হয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম। তবে তাঁকে সভাপতি করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া স্বেচ্ছাচারী আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আমিনুল হক। তাঁর দাবি, অনেক কাউন্সিলরকে ডেকে নিয়ে আসিফ মাহমুদ নিজে হুমকি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার পল্টনের হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে জিয়া আন্তভলিবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমিনুল হক বলেন, ‘বিসিবি নির্বাচন নিয়ে প্রধান উদ্বেগ হলো সরকারি হস্তক্ষেপ এবং ক্রীড়া উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ। তাঁর হস্তক্ষেপের প্রতিটি ঘটনার প্রমাণ রয়েছে। আমি শুনে অবাক হয়েছি যে ক্রীড়া উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন কাউন্সিলরকে হুমকি দিয়েছেন, নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। অনেক কাউন্সিলর আমাকে ফোন করে বলেছেন যে তাঁদের ডেকে নিয়ে এভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে।’

বিসিবি নির্বাচনটি আগে থেকেই ‘ফিক্স’ ছিল—এমন অভিযোগ তুলে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ ১৬ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। নির্বাচনে সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেছিলেন তাঁরাও। তাঁদের আরও অভিযোগ ছিল, জেলা ও বিভাগীয় কাউন্সিলর হিসেবে অ্যাডহক কমিটি থেকে মনোনয়ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা জানিয়ে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামের দেওয়া চিঠিটি বৈধ নয়। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বন্ধ হয়নি। হাইকোর্ট পরে রায় দেন, আমিনুল ইসলামের চিঠিটি বৈধ।

সেই চিঠি প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আমিনুল হক বলেন, ‘বুলবুল ভাইয়ের (আমিনুল ইসলাম) যে চিঠিটি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা রিট করে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, তার ফলে একটি আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও, আদালত রায় দিয়েছেন যে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির পর একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর অর্থ হলো, যদি হাইকোর্ট চিঠিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে, তবে ইতিমধ্যে নির্বাচিত সদস্যদের থাকা সত্ত্বেও পুরো নির্বাচনব্যবস্থাও বাতিল হয়ে যেতে পারে।’

এ সময় বিসিবি নির্বাচনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও তোলেন তিনি। বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য আছে যে আর্থিক লেনদেনও হয়েছে। এটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক যে বোর্ড পরিচালকেরা আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে পারেন। এটি তাঁদের হাতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি বিশাল সন্দেহ তৈরি করে। আমি মনে করি, পুরো নির্বাচনব্যবস্থাপনা এবং এই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী বা ক্রীড়া সংগঠকেরা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবেন না।’