রমনা বটমূলে বোমা হামলা: দুই যুগ পর রায় ঘোষণা শুরু হাইকোর্টে

দুই যুগ আগে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে চালানো বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দেওয়া রায় ঘোষণা শুরু করেছে হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় পড়া শুরু করেন।

ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) পাশাপাশি আসামিদের করা আপিলের শুনানি শেষে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন।

পরে বিষয়টি ৩০ এপ্রিল আদালতের কার্যতালিকায় এলে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করেন।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল, বাংলা নববর্ষের সকালে রাজধানীর রমনার বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন করা বৈশাখী অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ১০ জন। তদন্তে উঠে আসে, দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূল আঘাত করতেই মৌলবাদী গোষ্ঠী এ হামলা চালায়।

হামলার দিনই নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। ওই দুই মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি)-এর শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়।

ঘটনার প্রায় আট বছর পর, ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দুই মামলায় ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

এরপর ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দায়রা জজ রুহুল আমিন হত্যা মামলায় মুফতি হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মুফতি হান্নান, আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আব্দুল হাই ও শফিকুর রহমান।

যাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তাঁরা হলেন—শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আব্দুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।

২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা মামলার রায় অনুযায়ী মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। ফলে রমনা বটমূলে বিস্ফোরক আইনের মামলায় তার নাম বাদ দেওয়া হয়।

মামলায় কারাগারে থাকা আসামিরা পরে হাইকোর্টে খালাস চেয়ে আপিল করেন। অন্যদিকে, মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য নিয়ম অনুযায়ী মামলাটি উচ্চ আদালতে আসে।

বিভিন্ন বেঞ্চ পরিবর্তনের পর চলতি বছর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে মামলার চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের পর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।