দলীয় প্রতীকে ‘শাপলা কলি’ চূড়ান্ত করার পর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, তারা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো জোটে যাচ্ছেন না; বরং তিনটি দলই ভোটের মাঠে থাকবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপি নেতা বলেন,
“আগামীতে ধানের শীষ আর শাপলা কলির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির সঙ্গে জোট হবে না, জামায়াতের সঙ্গেও নয়। বরং যেখানে বিএনপি ও জামায়াত আছে, সেখানে এনসিপিও লড়বে সমানতালে।”
জোটে না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন,
“জামায়াতে ইসলামীর যে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ আছে, তার সঙ্গী আমরা হতে পারব না। আবার বিএনপির চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজনীতিরও অংশ হতে চাই না।”
‘শাপলা কলি’তে স্থির হলো এনসিপি
দলীয় প্রতীক নিয়ে চার মাসের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর অবশেষে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক গ্রহণ করেছে এনসিপি। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন,
“আমরা শাপলা কলি নিচ্ছি। দেশের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি—যারা প্রার্থী হতে চান, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। আমাদের অফিসে এসে প্রার্থিতা জমা দিন। আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব।”
দলটি প্রথমে ২২ জুন নিবন্ধনের সময় শাপলা, কলম ও মোবাইল—এই তিনটি প্রতীকের নাম পছন্দক্রমে দিয়েছিল। পরে ৩ আগস্ট চিঠি পাঠিয়ে পছন্দের তালিকা সংশোধন করে তারা ‘শাপলা, সাদা শাপলা ও লাল শাপলা’ নির্ধারণ করে।
তবে নির্বাচন কমিশন জানায়, বিধিমালায় ‘শাপলা’ প্রতীক না থাকায় তা দেওয়া সম্ভব নয়। ২৪ সেপ্টেম্বর বিধিমালা সংশোধন করে প্রতীক সংখ্যা ১১৫ করা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর ইসি এনসিপিকে জানায়, এক সপ্তাহের মধ্যে তালিকা থেকে পছন্দের প্রতীক বেছে নিতে। কিন্তু দলটি তাতে সাড়া না দিয়ে ‘শাপলা’ প্রতীকেই অনড় থাকে।
পরবর্তীতে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে পছন্দ না জানালে কমিশন নিজ উদ্যোগে প্রতীক নির্ধারণ করবে বলে জানায় ইসি। তবুও এনসিপি শাপলাই দাবি করে যায় এবং বিধিমালা সংশোধনের আবেদন জানায়।
অবশেষে কমিশন প্রতীক তালিকায় পরিবর্তন এনে ৩১ অক্টোবর নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করে। এতে আগের তালিকা থেকে ১৬টি প্রতীক বাদ দিয়ে ‘শাপলা কলি’সহ ২০টি নতুন প্রতীক যুক্ত করা হয়। এখন মোট ১১৯টি প্রতীক দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত আছে।
