সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ জারি, সচিবালয়ে দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ

সরকার সচিবালয়ের কর্মীদের আন্দোলনের মধ্যেই ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

এর প্রতিবাদে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা আজ রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন। তাঁরা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান। দাবি মানা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন।

এই আন্দোলন হচ্ছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে এই অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। আজ তা অধ্যাদেশ আকারে জারি হয়। কর্মচারীদের অভিযোগ, সাড়ে চার দশক আগের কিছু বিশেষ বিধানের ‘নিবর্তনমূলক ধারা’ এতে যুক্ত করা হয়েছে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের চারটি আচরণকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সেগুলো হলো: (১) অনানুগত্য বা অন্যদের অনানুগত্যে উৎসাহ দেওয়া বা শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা কর্তব্যে বাধা সৃষ্টি; (২) যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া একক বা সমবেতভাবে কর্ম থেকে বিরত থাকা বা অনুপস্থিত থাকা; (৩) অন্যকে কর্ম থেকে বিরত রাখতে উসকানি বা প্ররোচনা দেওয়া; (৪) অন্যকে কর্মে বাধাগ্রস্ত করা। এসবের জন্য কর্মচারী অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।

শাস্তি হিসেবে দোষী কর্মচারীকে নিম্ন পদ বা বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত করা যেতে পারে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে। অভিযুক্তকে দোষী মনে হলে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না, তা জানতে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর সুযোগ থাকবে। পরে দণ্ড দেওয়া যাবে। দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, তবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যাবে।

আন্দোলনরত কর্মচারীরা এই অধ্যাদেশকে সংবিধানবিরোধী দাবি করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *